কমিউনিকেসন্স অ্যাপস-ইমো, ভাইবার, হটসঅ্যাপ, স্কাইপি, ইত্যাদি বিদেশে কথা বোলার এক
নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। যার ফলে বিদেশি ভয়েস কল করার প্রবণতা অনেক কমে গেছে এবং
এই খাত এখন রীতিমতো লোকসানের মুখ দেখছে।
তাই রীতিমত চাপে পরেই এবং আন্তর্জাতিক গেটওয়েগুলোর ব্যাবসা টিকিয়ে রাখতে সরকার প্রতিমিনিটের
ইনকামিং কলের টারমিনেশন রেট দশমিক শূন্য ছয় সেন্টে নামিয়ে এনেছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন
নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সিস্টেম এন্ড সার্ভিসের উপ পরিচালক সাবিনা ইসলাম সাক্ষরিত চিঠিতে গত বৃহস্পতিবার
এই ইনকামিং কল রেট কমানোর চিঠি ইস্যু করা হয়।
বিদেশ থেকে আশা কলের রেট অনেক দফাতে কমানো হলেও এখনও প্রতি মিনিট কথা বলতে কয়েক টাকা
খরচ হয়। সেই তুলনায় কমিউনিকেসন্স অ্যাপস গুলো ব্যাবহার করলে ডেটা খরচ বাদে একরকম ফ্রি তেই
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা যায়।
আরও পড়ুন >> ভয়াবহ ৬০টি কবীরা গুনাহ ।। প্রচলিত কিছু কবীরা গুনাহ
অনেকের মতে প্রযুক্তির এই যুগে এখন প্রায় সবাই স্মার্টফোন ব্যাবহার করে যার ফলে দেশের বাইরে থাকা স্বজন
দের সাথে যোগাযোগের জন্যে তারা বিভিন্ন কমিউনিকেসন্স অ্যাপসকেই বেছে নিচ্ছে। যার কারন হিসেবে তারা
দেখিয়েছে যে এইসব কমিউনিকেসন্স অ্যাপস ব্যাবহার করা যেমন সহজ তেমনি ভয়েস কল করার থেকে
অনেক কম টাকায় কথা বলা যায় এবং ভিডিও কলেও কথা বলা যায়।
এছাড়াও প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারনে ভয়েস কলের অবৈধ ব্যাবসাও তৈরি হয়েছে যার ফলে বাজার হারাচ্ছে
বাংলাদেশের অপারেটরগুলো।অনেক দিন থেকে চলতে থাকা এইসব বিষয়গুলো নজরে রেখে এর উপর ব্যাবস্থা
নিচ্ছে সরকার।
বিটিআরসির সুত্র মতে- ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদেশ থেকে আশা কলের পরিমান
কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ।এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হিসাব অনুযায়ই সর্বশেষ অর্থবছরে
সব মিলে প্রায় এক হাজার ২১৩ কোটি মিনিটের কল বিদেশ থেকে এসেছে আগের অর্থবছরেও যা ছিল এক
হাজার ৯৯০ কোটি মিনিট।
বিটিআরসির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে- এইসব কমিউনিকেসন্স অ্যাপস গুলোর কারনে শুধু মাত্র
ইনকামিং কলেই নয় বরং আউটগোয়িং কল গুলোতে ও প্রভাব পরেছে।বাংলাদেশ থেকে ও বিদেশে কল
করার প্রবণতা এখন নেই বললেই চলে।
এইসব কমিউনিকেসন্স অ্যাপস গুলোর কারনে বাংলাদেশের মধ্যেও একটা বিরাট পরিবত্তন দেখা যাচ্ছে,এখন
মানুষ ভয়েস কলের বিপরিতে কমিউনিকেসন্স অ্যাপস গুলোতে কথা বলছে। যার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন
অপারেটর গুলো ব্যাবসায়ে ক্ষতির মুখ দেখবে বলে মনে করছে তারা।
বর্তমানে বাংলাদেশে ২৪ টির মত গেটওয়ে অপারেটর প্রতিষ্ঠান আছে যারা মুলত বিদেশে কথা বোলার বৈধ
গেটওয়ে ব্যাবহার করে বিদেশ থেকে কল আনা ও পাঠানোর ব্যাবসা করে।
বিটিআরসির সর্বশেষ হিসেবে দেখা যায় এখন দিনে বাংলাদেশে বিদেশ থেকে আশা কলের পরিমান কমেছে
প্রায় ২ কোটি মিনিট,যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ও ছিল ৫ কোটির অনেক ওপরে।
এখন দেখার বিষয় এই যে সরকারের এমন পদক্ষেপে বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতে কোন প্রভাব
পরে কিনা।অনেকের মতে এই খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে আরও যুগপোযুগি পদেক্ষেপ নিতে হবে।