মসজিদে ভিতর ও বাইরে জরুরী সুন্নাত ও আদব সমূহ

Spread the love

মসজিদে যাওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ

১. শরীর পবিত্র করে নিবে।
২. কাপড় পবিত্র করে নিবে।
৩. ঘর থেকে উযূ করে মসজিদে যাবে, মসজিদে যেয়ে উযূ করার চেয়ে ঘর থেকে উযু করে যাওয়া উত্তম।

৪. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বিসমিল্লাহ ও বের হওয়ার দুআ পড়বে। বিসমিল্লাহ সহ দুআটি এই ?
بسم الله توكلت على الله لا حول ولا قوة الا بالله
অর্থ : আল্লাহর নাম নিয়ে বের হলাম। আল্লাহর উপর ভরসা, আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি লাভ হয় না।

৫. ধীরস্থির ভাবে চলবে ।
৬. গাম্ভীর্যের সাথে চলবে।
৭. চলার পথে হাসি-তামাশা, ক্রিড়া-কৌতুক ও অহেতুক কাজ থেকে বিরত থাকবে।

৮. চলতে চলতে এই দুআ পড়বে ?
را واجعل في سمعي اللهم اجعل في قلبي ورا وفي نسانی ورا واجعل في بصری نورا واجعل من خلفی تورا من أمامى ورا واجعل من فوقى ورا من حتی نورا اللهم أعطنی تورا ۔ (کتاب الاذکار
অর্থ : হে আল্লাহ, তুমি দান কর আমার অন্তরে নূর এবং জবানে নূর। দান কর আমার শ্রবণ শক্তিতে নূর, দান কর আমার দৃষ্টিশক্তিতে নূর, দান কর আমার পশ্চাতে নূর এবং আমার সম্মুখে নূর, দান কর আমার উপরে নূর এবং আমার নীচে নূর। হে আল্লাহ, তুমি দান কর আমাকে নুর ।

৯. প্রত্যেকটা কদমে কদমে ছওয়াব হবে-এই বিশ্বাস ও আশা মনে বদ্ধমূল রেখে পথ চলবে।
১০. পথ চলার অন্যান্য আমল পালন কর |
১১. মসজিদ নজরে আসলে এই দুআ পড়বে ?
اللهم اغفرلی نوبي وخطائي وعمائ.
অর্থ : হে আল্লাহ, তুমি আমার ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত সকল গােনাহ খাতা মাপ করে দাও।

আরও পড়ুন >> কাতারের মাসায়েল – নামাজে কাতার দাঁড়ানোর সঠিক নিয়ম

মসজিদে প্রবেশের সুন্নাত ও আদব সমূহ

১. নত চোখে, ভীত মনে মসজিদে প্রবেশ করবে।
২. মসজিদে প্রবেশের পূর্বে জুতা খুলে নিবে। জুতা ভিতরে নিতে হলে ঝেড়ে পরিষ্কার পূর্বক নিবে।
৩. প্রথমে বাম পায়ের জুতা তারপর ডান পায়ের জুতা খুলবে ।
৪. প্রবেশের পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়বে।
৫. দুরূদ ও সালাম পড়বে।
৬. দুআ পড়বে।

এই তিনটাকে একত্রে এভাবে পড়া যায়
بسم الله والصلوة والسلام على رسول الله اللهم اغفرلي ذنوبي وافتح لى أبواب رحمتك.
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার সমস্ত গােনাহ মাফ কর এবং আমার জন্য তােমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও।

৭. প্রবেশ কালে এই দুআও পড়বে।
رب انزلني منزلا مباركا وانت خير المنزلين . ( الفتاوى الظهيرية)
অর্থ : হে আল্লাহ, তুমি কল্যাণকভাবে আমাকে অবতরণ করাও, তুমি শ্রেষ্ঠ। অবতারণকারী ।

মসজিদের ভিতরের সুন্নাত ও আদব সমূহ

১. মসজিদে প্রবেশ করতঃ (নফল) এ’তেকাফের নিয়ত করবে।
২. শয়তান থেকে পানাহ চাওয়ার নিম্নোক্ত দুআ পড়বে ?
أعوذ بالله العظيم وبوجهه الكريم وأطانه القديم من الشيطاني
أطانه القديم من الشيطان

৩. যে বা যারা নামাযে রত নয় তাদেরকে এমনভাবে সালাম দিবে যেন নামাযে রত লােকের নামাযে ব্যাঘাত না ঘটে ।
৪. মসজিদে কেউ না থাকলে বা অবসর কেউ না থাকলে এই বলে (আস্তে) সালাম দিবে ?
السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين . (معارف القرآن )

৫. হারাম এবং মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে মসজিদে প্রবেশ পূর্বক দুই রাকআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ/ দুখুলুল মসজিদ নামায পড়বে। এই নামায বসার পূর্বেই পড়া উত্তম। এই নামায না পড়তে পারলে দুরূদ শরীফ পড়বে এবং নিম্নোক্ত দুআটি চার বার পাঠ করবে ?
مبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر.
کتاب الاذکار و تبيد الغافاری )

৬. উপরােক্ত যিকির সহ অন্যান্য যিকির বেশী বেশী করা উত্তম।
৭. মােনাছের মত নেক কাজের কথা বলবে এবং গুনাহের কাজ দেখলে বাধা দিবে। এ দায়িত্ব মসজিদের বাইরেও রয়েছে তবে মসজিদে থাকাকালীন এর গুরুত্ব অধিক।
৮. মসজিদে বেচা-কেনা না করা।

৯, কাউকে বেচা-কেনা করতে দেখলে বলবে ?
لا أربح الله يجارتك . (ترمذی)
অর্থাৎ, আল্লাহ যেন তােমার কেনা-বেচায় লাভ না দেন।

১০. কোন হারানাে বস্তু তালাশের উদ্দেশ্যে মসজিদে ঘােষণা না দেয়া।
১১. কাউকে উপরােক্ত ঘােষণা করতে শুনলে বলবে
لا تردها الله عليك فإن المساج. تم بن لها- (مسلم)
অর্থ : আল্লাহ যেন ওটা তােমার কাছে ফিরিয়ে না দেন। মসজিদতাে এ উদ্দেশ্যে বানানাে হয়নি।

আরও পড়ুন >> আযান ও ইকামত এর উত্তর দেওয়া মুস্তাহাব

১২. আল্লাহর যিকির ব্যতীত আওয়াজ উঁচু না করা।
১৩. কোন শােরগােল না করা।
১৪. তলােয়ার বা ভীতিমূলক কিছু উন্মুক্ত না রাখা।
১৫. মসজিদে নিজের জন্য কিছু সওয়াল করা নিষেধ এবং এরূপ সওয়ালকারীকে কিছু প্রদান করা মাকরূহ তবে কোন হাজতমান্দ ব্যক্তির সহযােগিতার জন্য অন্য কেউ বলে দিতে পারে।
১৬. মসজিদে দুনিয়াবী কথা-বার্তা না বলা। তবে কারও সাথে সাক্ষাৎ হলে সংক্ষেপে হালপুরছী করা (হাল অবস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করা) নিষেধ নয়।
১৭. মসজিদে রাজনৈতিক মিটিং সিটিং করা মসজিদের আদব এহতেরামের খেলাপ।
১৮, মানুষের ঘাড়ের উপর দিয়ে না যাওয়া।
১৯. মসজিদে কোন স্থান দখল নিয়ে ঝগড়া না করা।
২০. কেউ কোন স্থান থেকে প্রয়ােজনে উঠে গিয়ে থাকলে এবং আবার সেখানে
আসবে বুঝতে পারলে তার স্থান দখল না করা।
২১. কাতারের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে কারও উপর চাপ সৃষ্টি না করা।
২২. নামাযে রত ব্যক্তির সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম না করা। (নামাযীর সােজা সামনে কেউ বসা থাকলে তিনি এক দিকে সরে যেতে পারেন)
২৩. মসজিদে কফ, থুথু, শিকনি না ফেলা বা কোনভাবে ময়লা আবর্জনা কিম্বা নাপাকী না ফেলা।
২৪. মসজিদে আঙ্গুল না ফোটানাে।
২৫. মসজিদে বায়ুত্যাগ না করা উত্তম, প্রয়ােজন হলে বাইরে এসে বায়ু ত্যাগ করবে।
২৬. শিশু এবং পাগলদেরকে মসজিদে না আনা।
২৭. মসজিদের মধ্যে যেনা, চুরি, হত্যা ইত্যাদির হদ্দ বা শাস্তি না দেয়া।
২৮. মসজিদে কিছু কুরআন, হাদীস, ফেকাহ ইত্যাদি দ্বীনী ইলমের তালীম করা উত্তম।

আরও পড়ুন >> ব্র্যাক ব্যাংক গৃহঋণ ৫০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু

মসজিদ থেকে বের হওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ

১. বের হওয়ার সময় দরজার/সিড়ির কাছে এসে বাইরে অপেক্ষমান শয়তান দলের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিম্নোক্ত দুআ পড়বে ।
اللهم إني أعودبك من ابليس وجنوده . (کتاب الاذکار )
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তােমার কাছে ইবলীছ ও তার বাহিনী থেকে পানাহ চাই।

২. বিসমিল্লাহ পড়বে।
৩. দুরূদ ও সালাম পড়বে।
৪. বের হওয়ার দুআ পড়বে। এই তিনটাকে একত্রে এভাবে পড়া যায়

ভিডিও  >> ইসলামে দাড়ি রাখা ফরজ নাকি সুন্নত

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *