ভাব-সম্প্রসারণ কাকে বলে? লেখার নিয়ম উদাহরণসহ

Spread the love

ভাব-সম্প্রসারণ কোন কবিতা বা গদ্যরচনার অংশকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করাকে ভাব-সম্প্রসারণ বলে। কবিতার বেলায় সেইসব পক্তির ভাব-সম্প্রসারণ দরকার হয়, যেগুলোর মধ্যে সুনির্দিষ্ট কোন বক্তব্য বা তত্ত্ব থাকে।

অন্যদিকে গদ্যরচনার সেইসব বাক্য ভাব-সম্প্রসারণের জন্য ঠিক করা হয়, সাধারণত যা প্রবাদ বা প্রবচনের মর্যাদায় উন্নীত। ভাব-সম্প্রসারণ করার সময়ে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মনে রাখা যেতে পারে:

(ক) ভাব-সম্প্রসারণকে প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত করা যায়: প্রথম অংশে ভাবের অর্থ, দ্বিতীয় অংশে | ভাবের ব্যাখ্যা এবং তৃতীয় অংশে ভাবের তাৎপর্য।
(খ) ভাব-সম্প্রসারণের এই অংশগুলোকে আলাদা তিনটি অনুচ্ছেদে উপস্থাপন করা যায়।
(গ) ভাবের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুক্তি দেখাতে হয়, উদাহরণ দিতে হয়, তুলনা করতে হয়।
(ঘ) ভাব-সম্প্রসারণের বাক্যগুলাে যাতে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা
দরকার।

আরও পড়ুন >> বীজগণিতের সহজ সূত্রাবলী

(ঙ) প্রয়োজনে সংক্ষিপ্ত উদ্ধৃতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
(চ) ভাব-সম্প্রসারণে আলাদা কোন শিরোনামের দরকার হয় না।
(ছ) মূল ভাবটি রূপক বা প্রতীকের আড়ালে থাকলে তাকে স্পষ্ট করতে হয়।
(জ) ভাব-সম্প্রসারণ করার সময়ে প্রদত্ত অংশের রচয়িতার নাম উল্লেখ করতে হয় না।
(ঝ) কমবেশি ২০০ শব্দ অথবা অনধিক ২০টি বাক্যের মধ্যে ভাব-সম্প্রসারণ সীমিত থাকা উচিত।

ভাব-সম্প্রসারণের উদাহরণঃ

”অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে। তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।”

ভাব-সম্প্রসারণঃ যে অন্যায় করে এবং যে সেই অন্যায় সহ্য করে, তারা উভয়ে সমান অপরাধী – উভয়ে সমান ঘৃণার পাত্র। আইনের দৃষ্টিতে অন্যায়কারীকে অপরাধী মনে করা হয়। তাই তার জন্য শাস্তির বিধান থাকে। আবার অনেক মানুষ আছে তারা সরাসরি অন্যায় করে না, কিন্তু পেছনে থেকে অন্যায়কারীকে সহায়তা করে বা অন্যায় করতে উৎসাহিত করে। আইনের আওতায় এরাও কখনাে কখনাে অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়। আবার, এমনও লোক থাকে – যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্যায় করে না, অন্যায় ঘটার সময়ে শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। আইনের চোখে তাদের অপরাধী বলা যায় না। আইনের চোখে অপরাধী না হলেও এই নীরব দর্শকেরাও এক অর্থে অন্যায় ঘটাতে সহযোগিতা করে। কেননা, অন্যায় সংঘটিত হওয়ার সময়ে ওইসব দর্শক যদি সরব প্রতিবাদীর ভূমিকা পালন করত, তাহলে অন্যায় ঘটত না। আইনের চোখে এরা হয়তো অপরাধী নয়, কিন্তু বিবেকের দায় থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া যায় না। সমাজ থেকে অন্যায়কে দূর করতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিবেকের দায়সম্পন্ন সচেতন মানুষের উপস্থিতিও জরুরি, যারা অন্যায়ের প্রতিবাদে সব সময়ে সোচ্চার হবে, সরব হবে। অপরাধী যাতে অপরাধ করার সুযোগ না পায়, সবাইকে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

আরও পড়ুন >> Dhaka Bank Silver Account ঢাকা ব্যাংক সিলভার হিসাবের সুবিধা

Check Also

রোকেয়া সাখাওয়াত

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাংলা রচনা ও জীবনী 100

Spread the loveভূমিকা (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন) : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে বলা হয় বাংলার নারী জাগরণের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *