দুআ মুনাজাতের আদব ও আমল সমূহ

Spread the love

দুআ মুনাজাতের আদব ও আমল প্রতিটি মুসলমানের জানা জরুরী। আল্লাহর কাছে দুআ প্রার্থনার আগে নিজেকে আত্মশুদ্ধি করে তবেই তার কাছে চাওয়া উচিত। দুআ মুনাজাতের আদব সমুহ দুআ মুনাজাতের আদব কায়দা।

দুআ কবুল হওয়ার জন্য সর্বক্ষণ যা যা করণীয় :

১। খাদ্য, পানীয়, পোশাক -পরিচ্ছদ ও আয়-উপার্জন হালাল হওয়া।
২। মাতা-পিতার নাফরমানী থেকে বিরত থাকা ।
৩। আমর বিল মারূফ ও নাহি আনিল মুনকার তথা ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে বারণ করা ।
৪ । আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করা ।

৫। কোন মুসলমানের সাথে অন্যায়ভাবে তিন দিনের বেশী কথা বন্ধ না রাখা ।
৬। গীবত না করা। গীবতকারী ব্যক্তির দুআ কবুল হয় না ।
৭। হাছাদ বা হিংসা না করা। হিংসুকের দুআ কবুল হয় না ।
৮। বখীলী বা কৃপণতা না করা। কৃপণ ব্যক্তির দুআ কবূল হয় না।
৯ । দুআ কবূল হওয়ার জন্য তাড়াহুড়া না করা ।
১০। হৃদয় মরে গেলে দুআ কবুল হয় না। উল্লেখ্য-যিকির না করলে, বেশী হাসলে, বেশী কথা বললে হৃদয় মরে যায়।

ভিডিও >> সুরাতুল আসর তাফসীর ।। সুন্দর বর্ণনা ।। হাফেজ মোহাম্মদ আলী

দুআর সময় বসার আদব :

১। কেবলামুখী হয়ে বসা ।
২। হাঁটু গেড়ে বসা । (দুআ মুনাজাতের আদব)
৩। আদব, তাওয়ায়ু ও বিনয়ের সাথে বসা ।
৪। পাক-সাফ হয়ে বসা ।
৫। উযূ সহকারে বসা ।
৬। দুআর সময় আসমানের দিকে নজর না উঠানো ।

দুআর সময় হাত উঠানোর নিয়মাবলী :

১। সীনা বা কাঁধ বরাবর হাত উঠানো।
২। উভয় হাতের তালু আসমানের দিকে রাখা মোস্তাহাব।
৩। উভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ কেবলা মুখী রাখা মোস্তাহাব ।
৪ । উভয় হাতের মাঝে সামান্য পরিমাণ ফাঁক রাখা মোস্তাহাব।
৫ । উভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে নয় বরং সামান্য ফাঁক সহকারে রাখা ।
৬। দুআ শেষ পূর্বক বরকতের জন্য মুখে হাত বুলিয়ে নেয়া ।

Google News বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন

দুআ শুরু এবং শেষ করার বাক্য সমূহ :

১। দুআর শুরু এবং শেষে আল্লাহর হাম্দ ও ছানা (প্রশংসা) বয়ান করা ।
২। দুআর শুরু এবং শেষে দুরূদ ও সালাম পড়া।
বিঃদ্রঃ এ দুটি আমলের জন্য নিম্নোক্ত বাক্য দিয়ে দুআ শুরু করা যায় :
سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ وَسَلَامُ عَلَى الْمُرْسَلِينَ وَالْحَمْدُ
لِلَّهِ رَبِّ الْعَلَمِينَ.
৩। ‘আমীন’ বলে দুআ শেষ করা।

দুআর সময় মনের অবস্থা যে রকম রাখতে হয় :

১। এখলাসের সাথে খালেস মনে দুআ করা অর্থাৎ, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পারে না-এই মনোভাব বদ্ধমূল রাখা ।
২। দ্ব্যার্থহীন মনোভাব নিয়ে দুআ করা ।
৩। আগ্রহ এবং অনুপ্রাণিত মনে দুআ করা।
৪ । যথা সম্ভব মনোযোগ সহকারে দুআ করা।
৫। নাছোড় মনোভাব নিয়ে দুআ করা। দুআ মুনাজাতের আদব
৬। দুআ কবূল হওয়ার দৃঢ় আশা রাখা ।

চাওয়ার আদব সমূহ :

১। আল্লাহর আসমায়ে হুছনা (উত্তম নাম) ও মহান গুণাবলী উল্লেখ পূর্বক চাইতে হয় ৷
২। প্রথমে নিজের জন্য, তারপর মাতা-পিতা ও অন্যান্য মুসলমান ভাইদের জন্য চাওয়া । ইমাম হলে জামাআতের সকলের জন্য চাইবেন।
৩। বারবার চাওয়া। অন্তত তিনবার। একই মজলিসে তিনবার বা তিন মজলিসে তিনবার। তবে তিনবার চাওয়ার এই নিয়ম একাকী দুআ করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

৪। নিম্ন স্বরে চাওয়া । তবে মজলিসের লোকদেরকে শুনানোর প্রয়োজনে জোর আওয়াজে দুআ করা যায়, কিন্তু যদি কোন নামাযী ব্যক্তির নামাযে ব্যাঘাত ঘটে, তাহলে তখন জোর আওয়াজে দুআ করা নিষিদ্ধ ।
৫। কোন নেক কাজের উল্লেখ পূর্বক দুআ কবূল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন করা।
৬। আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং অন্যান্য নেককার ও বুযুর্গদের ওছীলায় দুআ কবূল হওয়ার প্রার্থনা করা।

আরো পড়ুন >> বাংলাদেশর সেরা 5টি মোবাইল ব্যাংকিং। Mobile Banking

দুআর বিষয় বস্তু বিষয়ক আদব সমূহ:

১। আখেরাত ও দুনিয়া উভয় জগতের প্রয়োজনসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করে দুআ করা।
২। কোন পাপের বিষয় না চাওয়া। (দুআ মুনাজাতের আদব)

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *