বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ে রসিকতার জের ধরে এবার প্রান গেল এক সাধারন কৃষকের। করোনা ভাইরাস
নিয়ে প্রতিবেশীদের রসিকতায় ভয় পেয়ে আতঙ্কে ইলিয়াস হোসেন (৩৫) নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার সদর উপজেলার বেরইলপলিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ইলিয়াস হোসেন ওই গ্রামের মৃত আকরাম হোসেন মোল্যার ছেলে।
আসলাম হোসেনের বড় ভাই আবদুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, আসলাম খুবই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন। দুটি ছেলে মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। পরিবারে স্ত্রী কিংবা কারো সঙ্গেই তার কোনো ঝামেলা নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়েছে। তারপর সকাল ৮টার দিকে ছাগল বাঁধার জন্যে মাঠে যায়। কিন্তু সেখানে বাগানের মধ্যে একটি মেহগনি গাছে উঠে গলায় ফাঁস নেয়।
আরও পড়ুন >> জীবন বীমা কর্পোরেশন । নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
আসলাম হোসেনের চাচাতো ভাই মাগুরা সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজা বলেন, গত ৪ দিন ধরে সে সাধারণ জ্বরে ভুগছিলেন। এতে তার মনে কিছুটা ভয় ছিল। পরিচিতদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এমন রসিকতা করে। কিন্তু সেই রসিকতা বুঝতে না পেরে অত্যন্ত সহজ-সরল আসলাম স্থানীয় দুই গ্রাম্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। একইসঙ্গে দুইজনের দেয়া ওষুধ সেবন করে। এতে তার জ্বর চলে গেলেও মাথায় ব্যথা শুরু হয়।
এনামুল হক রাজা আরো বলেন, করোনায় আক্রান্তদের পুলিশ ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলবে এমন সব আতঙ্ক তার ভিতর ছিল। যার কারণে বোকার মতো সে আত্মহত্যা করে বসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেরইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বিশ্বজিত বলেন, এলাকার মানুষ নানা কথা বলে। ইলিয়াস হোসেনের আত্মহত্যার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। তবে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মতো কোনো পরিবেশই তার ছিল না। প্রতিবেশী কেউ বিদেশ থেকেও আসেনি, কেউ হোম কোয়ারেন্টিনেও নেই।
এদিকে তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী দুপুরে তার লাশ দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মাগুরা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, ইলিয়াস হোসেনের আত্মহত্যার কারণ কী জানি না। তার সাধারণ জ্বর থাকলেও করোনাভাইরাস রিলেডেট কোনো রোগীই তিনি নন। কোনো কন্ট্রাক্টও নেই। তারপরও এ বিষয়টি নিয়ে আইইডিসিআরের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আলাপ করেছি।
সিভিল সার্জন বলেন, ইলিয়াস হোসেনের লাশ দাফনের সঙ্গে সীমিত সংখ্যক মানুষ ছিলেন। সঙ্গত কারণেই তাদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী ছিলেন না।