পাবনার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
শুধুমাত্র বাংলাদেশে এ নয় পুরো উপমহাদেশের মধ্যে সবথেকে পুরনো ও দীর্ঘ রেল সেতু পাবনার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।২০২০ এ এসে এই ব্রিজ ১০৬ বছরে পদার্পণ করলো।১৯১৫ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশের সবথেকে দীর্ঘ এই রেল সেতু উদ্বোধন করে।
তৎকালীন সময়ে এই ব্রিজটি তৈরিতে মোট ব্যয় হয় ৩ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১শ ৬৪ টাকা।এর মধ্যে দুই পাশের রেল লাইনের জন্য ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা,স্প্যানের জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ,নদীর গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ৯৪ লাখ ৮ হাজার,ও ল্যান্ড স্পানের জন্য ব্যায় হয় ৫ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন >> Atish Dipankar University Carrer Opportunity
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী ব্রিজটির উপর একাধিক বোমা বর্ষণ করে যার ফলে ব্রিজটির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়।ফলে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিনবঙ্গের যোগাযোগ একদম বিছিন্ন হয়ে যায়।যুদ্ধের সময় যে বোমা মেরে ব্রিজের ক্ষতিসাধন করা হয়েছিল বর্তমানে সেই বোমা গুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাকশী রেলওয়ের জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ব্রিজটিকে ১০০ বছরের গ্যারান্টি দিয়েছিল।তবে যুদ্ধের ক্ষতি বাদ দিলে ১০৬ বছরে দাড়িয়েও ব্রিজটির কোন ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে নি।এখনও ব্রিজটি তার পূর্ণ যৌবন নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
১৮৮৯ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে।বিশেষ করে বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলার সাথে ভারতের দার্জিলিং ও আসামের সাথে যোগাযোগের সুবিদারথে পদ্মা নদীর উপর রেল ব্রিজ নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।১৯০৮ সালে ব্রিজ নির্মাণের মঞ্জুরি লাভ করার পর ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট উইলিয়াম গেইলসকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে,মুল নকশা প্রনয়নের জন্য এস এম বেন্দেলেগকে দায়িত্ত দেয়া হয়।১৯১০ সালে কাজ শুরু হয়ে প্রায় ২৪ হাজার শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯১৪ সালের শেসের দিকে এসে ব্রিজটির কাজ শেষ হয়। ১৯১৫ সালের ১ জানুয়ারি পরিক্ষামুলকভাবে প্রথম মালগাড়ী চালানো হয়।
ব্রিজটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। মুলত তার নামঅনুসরণ করেই ব্রিজটির নাম রাখা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।