দিন দিন করোনা আরও ভয়াবহ রুপ ধারন করছে। ইতোমধ্যে করোনার কারনে বিশ্বে ৬০ হাজার এর উপরে মানুষ প্রান হারিয়েছে।আক্রান্ত হয়েছে ১০ লক্ষের বেশি।বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই করোনা হানা দিয়েছে। চীন থেকে সৃষ্ট এই মহামারী এখন বিশ্বকে পুরো অচল করে দিয়েছে। বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতের পবিত্র স্থান সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনায় ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি চলছে।
সৌদি আরব সমগ্র মক্কা ও মদিনা বন্ধ ঘোষণা করেছে,যা পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বলবত থাকবে।গত ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সৌদি আরব সহ মুসলিম রাষ্ট্রের মসজিদ গুলো বন্ধ হয়ে আছে । সীমিত আকারে কিছু মানুষ শুধুমাত্র নামাজ আদায় করতে পারছে।
প্রায় ২০০ বছর পরে করোনা প্রভাবে সৌদি সরকার উমরাহ পালনে নিষেধাজ্ঞা দিতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি সৌদি সরকার এই বছর পবিত্র হজ্জ বাতিল করার বিবেচনা করছে।তবে তারা এই বিষয়ে কোন সিধান্ত নেয়নি।তারা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সিধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন। আল্লাহ তা লা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন এবং এমন অবস্থা যেন তৈরি না হয়।
আরও পড়ুন >> জীবন বীমা কর্পোরেশন । নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
সৌদি হজ্জমন্ত্রি মানুষকে এখনই হজ্জের প্রস্তুতি নিতে নিশেধ করেছেন। পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হয় তাহলে এই বছর হজ্জ বাতিলের জোরালো সম্ভাবনা আছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে হজ্জ শুরু হওয়াতে এখনও অনেক দেরি থাকায় আশার বানী রয়েছে এই ভায়রাসের কমে যাওয়া নিয়ে।
এর আগে ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবার হজ্জ বাতিল হয়েছিলো আব্বাসিদের সময়ে,ইসমাইল বিন ইউসুফের মক্কা আক্রমণের কারনে।এরপর ৯৩০ সালে । কট্টর শিয়া গ্রুপের কারমাতিদের আক্রমণে সেই বছর ৩০০০০ হাজি শহীদ হয়েছিলো।৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ্ব বাতিল হয়েছিল রাজনীতির কারণে। ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক আব্বাসীয় খিলাফত এবং মিসর ভিত্তিক ফাতেমীয় খিলাফতের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে সেবার ৮ বছর পর্যন্ত হজ্ব বন্ধ ছিল।শুধু যুদ্ধ-বিগ্রহ না, মহামারীর কারণেও হজ্ব বাতিল হয়েছিল। প্রথমে ১৮১৪ সালে হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে ৮,০০০ মানুষ মারা যাওয়ায় হজ্ব বাতিল করা হয়। এরপর ১৮৩১ সালে ভারত থেকে যাওয়া হজ্বযাত্রীদের মাধ্যমে মক্কায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং চারভাগের তিনভাগ হাজী মৃত্যুবরণ করে। ফলে সে বছর হজ্ব বাতিল করা হয়। এছাড়াও ১৮৩৭ থেকে ১৮৫৮ সালের মধ্যে প্লেগ এবং কলেরার কারণে তিন বারে মোট ৭ বছর হজ্ব বন্ধ ছিল।
তবে এবার যদি করোনার কারনে হজ্জ বন্ধ হয় তবে সেটা হবে খুবই দুঃখজনক।