১০টি কারণে স্মার্টফোন
আধুনিক বর্তমান এই প্রযুক্তিনির্ভর যুগে প্রায় সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। স্মার্টফোনের অন্যতম একটি সমস্যা হলো- ব্যবহারের মাঝখানে খুবই গরম হয়ে যায়। স্মার্টফোন গরম হওয়ার বেশ কিছু কারণও আমরা লক্ষ করছি। যেটা স্মার্টফোন অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া আর এর কারণে বিপদ হতে পারে। তাই আমাদের স্মার্টফোন অতিরিক্ত গরম হবার কারণ এবং সমাধান জানা জরুরী।
যে সকল কারণগুলো স্মার্টফোন গরম হয়ে তার মধ্যে অন্যতম কারণগুলো নিম্নরুপ:
১। ব্যাটারি:
মোবাইল কম্পানিগুলো বর্তমানে স্মার্টফোন দিন দিন পাতলা করছে। তবে তার তুলনায় ব্যাটারির প্রযুক্তি তেমন উন্নত হয়নি। ব্যাটারি যত বেশি দুর্বল হবে ফোন তত বেশি তাপ উৎপন্ন করবে। ব্যাটারি চার্জ নেওয়ার সময় অথবা ডিচার্জ হওয়ার সময়েও ফোন বেশি গরম হয়ে থাকে।
২। কি পরিমান গরম হওয়া স্বাভাবিক:
আপনার ফোন কম দামি বলে বেশি গরম হয়, তা ঠিক নয়। স্বাভাবিকভাবে স্মার্টফোন ৩৫-৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম হতে পারে। তবে স্ট্যান্ড বাই মোডেও যদি ফোনটি ৩৫-৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম হয় তবে বুঝবেন আপনর ফোনে সমস্যা আছে।
৩। দুর্বল নেটওয়ার্ক:
ফোন গরম হওয়ার আরেকটি করণ হচ্ছে দুর্বল নেটওয়ার্ক। আপনার ফোনে যদি নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকে তখন সিগনাল যায় আর আসে। আবার ওয়াইফাই ব্যবহারে সিগন্যালের জন্য অনেক বেগ পেতে হয়। দুর্বল নেটওয়ার্কের জন্য ফোনে বেশি চাপ পরে, যার ফলে স্মার্টফোন অত্যাধিক গরম হয়ে থাকে।
৪। প্রসেসর:
স্মার্টফোন গরম হওয়ার একটি করণ হচ্ছে প্রসেসর গরম হওয়া। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন স্মার্টফোনের মূল অঙ্গ হচ্ছে প্রসেসর। প্রসেসর এমন একটি ডিভাইস যা সবসময় কাজ করে থাকে। আপনি ফোন ব্যবহার করেন আর নাই করেন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইলেকট্রন দিয়ে প্রসেসর তৈরী হয়ে থাকে। প্রসেসর স্মার্টফোনের বডির সাথে লাগানো থাকে যার ফলে তাপ অনুভব হয়।
আরও পড়ুন >> সূরা ইখলাস ও সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমুহ
স্মার্টফোন অতিরিক্ত গরম থেকে মুক্তির উপায়:
সবসময় খেয়াল রাখবেন যে ফোনে যেন চার্জ থাকে। একসাথে বেশি অ্যাপস চালু করে রাখবেন না। ফোনের অতিরিক্ত অ্যাপস ব্যাকগ্রাউন্ডে বেশি জায়গা নিয়ে নিচ্ছে কিনা সে দিকে খেয়াল রাখুন। স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার করলে বা ফোনে অতিরিক্ত গেমস খেললে গরম হয় এটা একেবারেই ঠিক নয়।
র্যাম ও ক্যাশ মেমোরি সবসময় পরিস্কার রাখুন। অপ্রয়োজনীয় ম্যাসেজ ডিলিট করুন। ফোনে কোন অ্যানিমিশন চালু থাকলে বন্ধ করুন। ফোনে এমন কভার ব্যবহার করুন যেন কভারটি চামরার হয়। বাহিরের তাপে যেন ফোন গরম না হয়ে যায় সেই দিকে খেয়াল রাখুন।
সবসময় ওয়াই-ফাই ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। পাশাপাশি, সবসময় ডেটা চালু করে রাখা উচিত নয়।
৫। সারা রাত চার্জ নয়
অনেকেই রাতের বেলা ফোন চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে ফোনটি সারা রাত ধরে চার্জ হয়। এর ফলে ওভার চার্জিং হয়ে থাকে। যা ফোনের জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়। এছাড়া সারা রাত ফোনে চার্জে দেওয়ার ফলে ব্যাটারি অতিরিক্তি গরম হয়ে বিস্ফোরণও ঘটতে পারে।
৬। ফোনের নিজস্ব চার্জার দিয়ে চার্জ দেওয়া
ফোনটি যদি সেই ফোনের সাথে পাওয়া চার্জারে চার্জ দেওয়া হয় তবে ব্যাটারির আয়ু বাড়ে। এখন অবশ্য ফোনে চার্জ দেওয়ার জন্য রয়েছে মাইক্রোইউএসবি পোর্ট। তাই যে কোনো চার্জার দিয়ে ফোনে চার্জ দেওয়া যায়। তবে যদি চার্জিংয়ের সময় ফোনের নিজস্ব চার্জার ব্যবহার না করা হয় তাহলে ধীরে ধীরে ব্যাটারির চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা কমতে থাকে।
৭। কখন চার্জে দিবেন ফোন
ফোনে ২০ শতাংশের উপরে চার্জ থাকলে চার্জ দেওয়া উচিত নয়। আবার ব্যাটারি চার্জ শূন্য করেও চার্জে দেওয়া ঠিক নয়। কেননা অপ্রয়োজনীয় রিচার্জে ব্যাটারির আয়ু কমে যায়। সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫-২০ শতাংশ চার্জ থাকা অবস্থায় ফোন চার্জে দেওয়া ভালো।
৮। কেস খুলে রাখা
যখন ফোন চার্জে দেওয়া হয় তখন ব্যাটারি কিছুটা গরম হয়ে যায়। ব্যাটারি গরমের প্রভাব ফোনে ছড়িয়ে পড়ে। তাই ফোনকে অতিরিক্ত গরমের হাত থেকে রক্ষা করতে চার্জে থাকা অবস্থায় ফোনের নিরাপত্তামূলক কেসিং বা কভার খুলে রাখা উচিত।
৯। পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারের সময়
পাওয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে চার্জ দেওয়া অবস্থায় ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। কেননা পাওয়ার ব্যাংকের সাহায্যে চার্জ করার সময় ব্যাটারি গরম হয়ে যায়। একই সময় ফোনটি ব্যবহার করলে তা আরও গরম হয়ে যাবে। যা ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর।
More >> OPPO A76 Mobile Full Specification & Price
১০। সস্তা চার্জার ব্যবহার না করা
অনেক সময় ফোনের জন্য নির্ধারিত চার্জারটি হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অনেকেই বাজার থেকে সস্তা ও অখ্যাত ব্র্যান্ডের চার্জার কেনেন। এসব চার্জারে চার্জ দিলে ফোন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। চার্জ হতেও সময় বেশি নেয়। আর অ্যাডাপ্টারে সমস্যা দেখা দিলে ফোন ও ব্যাটারি দু’টোই নষ্ট হতে পারে। তাই সস্তা চার্জার ব্যবহার না করাই ভালো।
১১। ব্যাটারি অ্যাপ্লিকেশন
ফোনের জন্য অনেক থার্ডপার্টি ব্যাটারি অপটিমাইজ অ্যাপ রয়েছে। এই অ্যাপগুলো ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে। এতে করে ফোনের চার্জ আরও বেশি ব্যয় হয়। এছাড়া লকস্ক্রিনটি অ্যাপগুলো এড লোড করে থাকে। তাই ফোনে আলাদা কোনো ব্যাটারি অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত নয়।