শিশুদের যে সব নাম রাখা হারাম – ইসলাম কি বলে?

Spread the love

শিশুদের যে সব নাম রাখা হারাম

শিশুদের যে সব নাম রাখা হারাম – মুসলমান শিশুদের কি নাম রাখা হারাম? কি নাম রাখা উচিত? অনেকে বলে তার শিশুর নাম পবিত্র কোরআন দেখেই রেখেছে। কিন্তু কুরআনে তো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম কাফেরদের নামও উল্লেখ রয়েছে। যেমন- ইবলিস, ফেরাউন, হামান, কারুন, আবু লাহাব ইত্যাদি, তাই নাম রাখার আগে ভেবে চিন্তে নাম রাখুন।

আল্লাহর নিকট সবচেয়ে উত্তম নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুনিয়ত ছিল- আবুল কাসেম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের সন্তানের নাম রেখেছিলেন ইব্রাহিম। কুরআনে কারীমে ২৫ জন নবী-রাসূলের নাম বর্ণিত আছে মর্মে আলেমগণ উল্লেখ করেছেন। এর থেকে পছন্দমত যে কোনো নাম নবজাতকের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে।

ইসলামে যেসব নাম রাখা হারাম

আল্লাহর নাম নয় এমন কোনো নামের সাথে গোলাম বা আব্দ (বান্দা) শব্দটিকে সম্বন্ধ করে নাম রাখা হারাম। যেমনঃ
০১। আব্দুল ওজ্জা- (ওজ্জার উপাসক)
০২। আব্দুশ শামস- (সূর্যের উপাসক)
০৩। আব্দুল কামার- (চন্দ্রের উপাসক)
০৪। আব্দুল কালাম- (কথার উপাসক)
০৫। আব্দুন নবী- (নবীর উপাসক)
০৬। আব্দুল আলী- (আলী এর উপাসক)
০৭। আব্দুল হোসাইন- (হোসাইন এর উপাসক)
০৮। আব্দুল মোত্তালিব- (মোত্তালিবের দাস)
০৯। আব্দুল কাবা- (কাবাগৃহের দাস)
১০। গোলাম রসূল- (রসূলের দাস)
১১। গোলাম নবী- (নবীর দাস)
১২। আব্দুল আমীর- (গর্ভনরের দাস)
১৩। গোলাম মুহাম্মদ- (মুহাম্মদের দাস)
১৪। গোলাম মহিউদ্দীন- (মহিউদ্দীন এর দাস)
১৫। মালেকুল আমলাক- (রাজাদের রা
১৬। কাযীউল কুযযাত- (বিচারকদের বিচারক)
১৭। নুরুন নবী- (নবীর নুর)
১৮। শাহেনশা- (বাদশাদের বাদশা)
১৯। সুলতানুস সালাতীন- (সম্রাটদের সম্র)
২০। হাকিমুল হুক্কাম- (বিচারপতিদের বিচারপতি)
২১। গোলাম কাদের- (কাদেরের দাস) ইত্যাদি

আরও পড়ুন >> ইসলামী ব্যাংক এর সহজ লোন সুবিধা । IBBL Easy Loan

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশিত আরো যেসব নিষিদ্ধ নাম রয়েছে সেগুলো হলোঃ
০১। আফলাহ- (মুক্তিপ্রাপ্ত)
০২। ইয়ালা- (সুউচ্চ)
০৩। ইয়াসার- (ঐস্বর্যশালী)
০৪। নাজীহ- (সফলকাম)
০৫। বারাকা- (আশীর্বাদ)
০৬। রাবাহ- (লাভজনক)

ইমাম ইবনে কাইয়েম (রহতুল্লাহ আলাইহি)-এর বর্ণনা মতে এ অর্থের সামাঞ্জস্যপূর্ণ আরো নাম হলোঃ
০১। খায়ের- (মঙ্গলজনক)
০২। নিয়ামা- (আশিস)
০৩। মুফলেহ- (সফলকাম)
০৪। সুরুর- (আনন্দময়)

তবে হাক্কানী আলেমগণের মতে ঐগুলোর অর্থের অনুরূপ যে নামগুলো শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যই প্রযোজ্য সেগুলো হলোঃ
০১। খাররুল আনাম- (সর্বশ্রেষ্ট সৃষ্টি)
০২। খায়রুল বাশার- (সর্বশ্রেষ্ট মানব)
০৩। সাইয়েদুল বাশার- (মানব জাতির প্রধান) ইত্যাদি।

আরও জানুন >> স্বপ্নে বাড়ী ঘর দেখলে আপনার কি হতে পারে

সরাসরি আল্লাহর নামে নাম রাখা হারামঃ

০১। আর-রাহমান- (পরম করুণাময়)
০২। আর-রহীম- (অতি দয়ালু)
০৩। আল-আহাদ- (এক,একক,অদ্বিতীয়)
০৪। আস-সামাদ- (অমুখাপেক্ষী)
০৫। আল-খালেক- (সৃষ্টি কর্তা)
০৬। আর-রাজ্জাক- (রিযিক দাতা)
০৭। আল-আওয়াল- (সর্ব প্রথম)
০৮। আল-আখের- (সর্বশেষ) ইত্যাদি

তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় নামের মধ্যে ‘আব্দ’ শব্দটা থাকলেও ডাকার সময় ‘আব্দ’ শব্দটা ছাড়া ব্যক্তিকে ডাকা হয়। যেমন আব্দুর রহমানকে ডাকা হয় রহমান বলে। আব্দুর রহীমকে ডাকা হয় রহীম বলে। এটি অনুচিত।

যে সব নাম রাখা মাকরুহ বা ঘৃণিতঃ

দাম্ভিক ও অহংকারী শাসকদের নামে নাম রাখা। যেমনঃ
০১। ফেরাউন
০২। হামান
০৩। কারুন
০৪। ওয়ালিদ

শয়তানের নামে নাম রাখা। যেমনঃ
০১ । ইবলিস
০২। ওয়ালহান
০৩। আজদা
০৪। খিনজিব
০৫। হাব্বাব

সুন্দর নাম দেখতে চাইলে ডাউনলোড করুন (PDF File)

যে সকল নামের অর্থ মন্দ। মানুষের স্বাভাবিক রুচিবোধ যেসব শব্দকে নাম হিসেবে ঘৃণা করে; ভদ্রতা ও শালীনতার পরিপন্থী কোন শব্দকে নাম বা কুনিয়ত হিসেবে গ্রহণ করা। যেমনঃ
০১। কালব- (কুকুর)
০২। মুররা- (তিক্ত)
০৩। হারব- (যুদ্ধ) ইত্যাদি।

ফেরেশতাদের নামে নামকরণ। যেমনঃ
০১। জিব্রাঈল
০২। মিকাঈল
০৩। ইসরাফিল
০৪। আজরাঈল

কুরআন শরীফের কোন সূরার নামে নামকরণ। যেমনঃ
০১। ত্বাহা
০২। ইয়াছিন
০৩। হা-মীম ইত্যাদি।

কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গুণবাচক নামের তাজিমার্থে ত্বাহা ও ইয়াছিন বৈধ।

আমাদের দেশে শিশুর জন্মের পর নাম রাখা নিয়ে আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা দেখা যায়। দাদা এক নাম রাখলে নানা অন্য একটা নাম পছন্দ করেন। বাবা-মা শিশুকে এক নামে ডাকে। খালারা বা ফুফুরা আবার ভিন্ন নামে ডাকে। এভাবে একটা বিড়ম্বনা প্রায়ই দেখা যায়। এ ব্যাপারে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শাইখ বাকর আবু যায়দ বলেন, নাম রাখা নিয়ে পিতা-মাতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে শিশুর পিতাই নাম রাখার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত।” [সূরা আহযাব ৩৩:৫]

Check Also

মহাকবি অল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল

মহাকবি অল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল জীবনী Allama Muhammad Iqbal

Spread the love মহাকবি অল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল (Allama Muhammad Iqbal) ছিলেন একজন বিশিষ্ট দার্শনিক, কবি, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *