বিয়ের পর ওজন কেন বাড়ে – বিয়ের পর অনেকেরই ওজন একটু করে বাড়ে—এটা কেবল “মিথ” না; বহু গবেষণায় দেখা গেছে বিয়ে/সহবাস শুরুর পর গড়পড়তা BMI ও অতিরিক্ত ওজনের ঝুঁকি বাড়ে। কারণগুলো বেশিরভাগই জীবনযাপন ও মনস্তাত্ত্বিক অভ্যাসের বদল, আর সন্তান হলে postpartum ওজন ধরে থাকার প্রভাব।
কেন বাড়ে (কারণগুলো পয়েন্টে)
- দৈনন্দিন রুটিন বদলায়: একসাথে খাওয়া-দাওয়া, বাইরে বেশি খাওয়া, পরিমাণ বেশি হওয়া—এসব মিলেই ক্যালোরি বেড়ে যায়। দম্পতির খাদ্যাভ্যাস/শারীরিক কার্যকলাপ প্রায়ই একে অপরকে প্রভাবিত করে (spousal concordance) ।
- ব্যায়ামের সময় কমে যায়: বিয়ের পর গৃহস্থালি, সামাজিকতা, কাজের চাপ—এসব মিলিয়ে গড়ে ব্যায়ামের সময় কমে; সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে বিয়ে ব্যায়াম-সময়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে দেখা গেছে।
- ঘুম কম হওয়া (বিশেষ করে নতুন বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে): নিয়মিত কম ঘুম ক্ষুধা-হরমোন বদলায়, বেশি ক্যালোরি খেতে টানে—ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন
- গর্ভধারণ ও প্রসব–পরবর্তী (Postpartum) ওজন ধরে রাখা: বিয়ের পর ওজন কেন বাড়ে নারীদের ক্ষেত্রে প্রসবের পরে বাড়তি ওজন অনেকদিন থাকে; এটিই পরে স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। প্রথম ৬ মাসে যে ওজন ঝরে না, তা ১ বছরে ≥৫ কেজি ধরে থাকার ঝুঁকি বাড়ায়।
- মনস্তত্ত্ব/প্রেরণা: সম্পর্ক ভালো থাকলে “নিজেকে আকর্ষণীয় দেখানোর” তাগিদ কিছুটা কমে গিয়ে অজান্তে ক্যালোরি বেড়ে যেতে পারে—নবদম্পতিদের নিয়ে গবেষণায় এমন প্রবণতা ধরা পড়েছে।
- বয়স ও স্বাভাবিক প্রবণতা: বয়স বাড়ার সাথে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়ার ঝোঁক থাকে; ঘুম-ব্যায়ামের ঘাটতি থাকলে এই প্রবণতা ত্বরান্বিত হয়।
কীভাবে সামলাবেন (কাপল–ফার্স্ট টিপস)
- দুইজনের যৌথ লক্ষ্য ঠিক করুন: সপ্তাহে মোট 150 মিনিট brisk walk/ব্যায়াম—কে কোন দিনে করবেন, একসাথে নাকি আলাদা—এটা লিখে নিন। দম্পতি-ভিত্তিক হেলথ ইন্টারভেনশনগুলো সাধারণত বেশি কার্যকর হয়।
- খাবারের “পরিমাণ” মানুন: ঘরে রান্না বাড়ান, প্লেট ছোট রাখুন, তেল-চিনি মেপে ব্যবহার করুন; একে অপরকে “রিফিল” অফার না করে সালাদ/ফল বাড়ানোর ভূমিকা নিন। দম্পতির অভ্যাস একে অন্যকে টেনে নেয়—ভালোটাই টানুন।
- ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন: সম্ভব হলে ৭–৯ ঘণ্টা লক্ষ্য করুন; শোয়ার সময় নির্দিষ্ট রাখুন, স্ক্রিন টাইম কমান—ওজন নিয়ন্ত্রণে এটার প্রভাব বাস্তব।
- ওজন–কমর পরিমাপ ট্র্যাক: সপ্তাহে একদিন একই সময়ে ওয়েট/কমর মাপুন; ছোট বিচ্যুতি তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে। ( বিয়ের পর ওজন কেন বাড়ে গবেষণাগুলো দেখায়—পরিবর্তন লুকিয়ে আসে ধীরে ধীরে।)
- সন্তান হলে পরিকল্পনা: গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধির গাইডলাইন মানা, প্রসবের পর ধীরে ধীরে হাঁটা-হালকা ব্যায়াম শুরু, পরিবার থেকে সাহায্য নেওয়া—এসব PPWR কমাতে সাহায্য করে।
- ওষুধ/কন্ট্রাসেপটিভ নিয়ে ভুল ধারণা দূর করুন: কম্বাইন্ড পিল (ইস্ট্রোজেন + প্রোজেস্টিন) সাধারণত “ওজন-নিউট্রাল”; কিছু প্রোজেস্টিন-অনলি পদ্ধতিতে গড়ে সামান্য (≈২ কেজি/৬–১২ মাস) ওজন বাড়তে পারে—ব্যক্তিভেদে ভিন্ন। বিয়ের পর ওজন কেন বাড়ে সিদ্ধান্ত নিন চিকিৎসকের সাথে কথা বলে।
মনে রাখুন: বিয়ের পর ওজন কেন বাড়ে – বিয়ে নিজে “ওজন বাড়ায়” না—বরং সম্পর্ক-পরবর্তী অভ্যাস বদলটাই মূল চালিকা শক্তি। একসাথে ছোট ছোট পরিবর্তন (পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ, হাঁটা, ঘুম) ধারাবাহিকভাবে করলে “বিয়ের পরের ওজন” খুব ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।