১। প্রত্যেক নেক কাজ “বিসমিল্লাহ” বলিয়া আরম্ভ করিলে সওয়াব ও বরকত হয়। খাওয়ার শুরুতে, পানি পান করিতে, অজু করিতে, যানবাহনে আরােহণ ও অবতরণ কালে, ঘরের দরজা বন্ধ করিতে, বাতি নিভাইতে, পাত্র আবৃত করিতেও ‘বিসমিল্লাহ’ বলিলে অনেক সওয়াব লাভ করা যায় ।
২। “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবিহামদিহি আসতাগফিরুল্লাহ”এই দোয়া ফজরের নামাজের পূর্বে অথবা পরে একতশবার পাঠ করিলে পাহাড় পরিমাণ গুনাহ থাকিলেও মাফ করিয়া দেওয়া হয়। ইহা খুবই ফজিলতপূর্ণ দোয়া। আল্লাহপাক ইহার এক একটি শব্দ হইতে এক এক জন ফেরেশতা সৃষ্টি করিয়া পাঠকারীর জন্য কেয়ামত পর্যন্ত উক্ত তছবিহ পড়িতে নিযুক্ত করিবেন এবং ইহার সওয়াব পাঠকারী পাইতে থাকিবে। ইহা সাদকায়ে জারীয়ার মত অর্থাৎ স্থায়ী সওয়াব লাভের উপায়।
৩। “আল্লাহুমা রাব্বানা ওলাকাল হামদ বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমিন” এই দোয়া বেশী বেশী পাঠ করিলে বিনা হিসাবে বেহেশত লাভ করা যায়।
৪। ভাল স্বপ্ন দেখিলে ‘‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়িবে এবং কোন নেক্কার লােকের নিকট তা প্রকাশ করিবে আর খারাপ স্বপ্ন দেখিলে ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম” পড়িবে । ইহাতে অনেক সওয়াব হয় এবং স্বপ্নের অপকারিতা দূর হয়।
৫। কাহারও উপর কোন বান মারিলে বা যাদুটোনা করিলে ‘‘আম আবরামু আমরান ফাইন্না মুবরিমুন” সাতবার পাঠ করিয়া পানিতে দম দিয়া পানি দ্বারা গােসল করাইলে ও কিছু খাওয়াইলে, যাদু টোনা ও বান বিনষ্ট হইয়া যাইবে । বিসমিল্লাহ সহ ‘‘কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাকি ও কুল আউজু বিরাব্বিন নাছ” পড়িয়া পানি ফুক দিয়া খাওয়াইলে যাদু টোনা বান বিনষ্ট হইয়া যাইবে। |
৬। যে কোন কঠিন রােগে বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা পাঠ করিয়া রােগীকে ফু দিলে আরােগ্য লাভ করা যায় ।
৭। “রাব্বি লা তায়ারনি ফারদাও ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসিন” এই দোয়া প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সাতবার করিয়া পাঠ করিলে এবং কিছুদিন মুরগীর ডিম খাইলে সন্তান হইবে ইনশাআল্লাহ।
৮। হাঁচি দিলে “আলহামদুলিল্লাহ’ বলিবে এবং শুনিলে ইয়ার হামুকুল্লাহ বলিবে । ইহাতে উভয়ের গােনাহ্ মাফ হইবে এবং অনেক সওয়াব লাভ হইবে।
৯। সদা সর্বদা চলাফিরা ও উঠাবসার সময় “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি” পাঠ করিবে । ইহাতে গুনাহ মাফ হইবে এবং সওয়াব লাভ হইবে ।
১০। মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখিয়া এই দোয়া পড়িবে, “বিসমিল্লাহি ওয়াআলা মিল্লাতি রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহাতে উভয়ের সওয়াব হইবে।
১১। কবরে মাটি দেওয়ার সময় পাঠ করিবে, “মিনহা খালাকনাকুম ওয়া ফিহা নুইয়িদুকুম, ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা” ইহাতে অনেক সওয়াব হইবে ।
১২। কবর জিয়ারত করিবার সময় বলিবে “আচ্ছালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর”। ইহাতে অশেষ সওয়াব লাভ হয় ।
১৩। শবে কদরের রাত্রিতে, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্দুন তুহিব্দুল আফওয়া ফাপুআন্নি ইয়া গাফুৰু ইয়া গাফুরু” এই দোয়া পড়িলে আল্লাহ তায়ালা গােনাহ মাফ করিয়া দেন। |
১৪। কোন মুসলমানের মৃত্যু সংবাদ শুনিয়া কিংবা কোন জিনিস হারাইয়া গেলে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” পড়িলে অনেক উপকার ও সওয়াব হয়।
১৫। “ইয়া ওয়াদুদু” পাঠ করিয়া দ্রব্যে ফু দিয়া স্বামী-স্ত্রীকে খাওয়াইলে উভয়ের মধ্যে গভীর ভালবাসা হয়।
১৬। নামাজের পর তিনবার “ফাকা শাফনা আনকা গিয়াকা ফাবা’ছারুকাল ইয়াওমা হাদিদ” ও এগার বার “ইয়া নুৰু ইয়া বাছিরু” পড়িয়া চোখে হাত বুলাইয়া ফু দিলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায় ও চক্ষু রােগ আরােগ্য হয়।
১৭। “হাছবুনাল্লাহু ওয়ানি মাল ওয়াকিল”(অর্থাৎ আল্লাহতায়ালাই। আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কার্যনির্বাহক) এই দোয়া সদা সর্বদা পাঠ করিলে, বিপদাপদ দূর হয়, রুজি-রােজগার বৃদ্ধি পায় ও মনের মাকসুদ পূর্ণ না কম।
১৮। “লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওহাদাহু লাশারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা ইউমিতু বিয়াদিহিল খায়রু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির”এই দোয়া বাজারে অবস্থানকালে পাঠ করিলে এক লক্ষ গুনাহ মাফ হয় ও এক লক্ষ নেকি আমল নামায় লিখা হয়। আর সকালে পড়িলে সন্ধা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যায় পড়িলে সকাল পর্যন্ত কোন কিছুই তাহার ক্ষতি করিতে পারিবে না। নামাজের পর পাঠ করিলে অসংখ্য গােনাহ মাফ করা হয় ও অসংখ্য নেকি আমল নামায় লিখা হয়।
১৯। “সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” এই দোয়া সকাল ও সন্ধ্যায় একশত বার পাঠ করিলে পাঠকারীর আমল নামায় একশত হজ্ব করার সওয়াব, একশত ঘােড়া জিহাদে দান করার সওয়াব এবং একশত গােলাম আজাদ করার সওয়াব লিখা হয়। পাঠকারীর সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হয়।
২০। কেহ দোয়া চাইলে কিংবা কাহাকেও বিদায় দিবার সময় বলিবে “ফি আমানিল্লাহ”।
২১। হজ্ব নছিব হইবার জন্য এক হাজার বার পাঠ করিবে “মাশআল্লাহ”।
২২। ভাল কোন কিছু শুনিলে বলিবে, “সুবহানাল্লাহ’।
২৩। খারাপ কোন কিছু শুনিলে বলিবে, “নাউজুবিল্লাহ‘।
২৪। কোন পশু-পাখি জবেহ করার সময় বলিবে, “বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার”।
২৫। মসজিদে প্রবেশ করিবার সময় ডান পা প্রথমে দিয়া পাঠ করিবে, “বিসমিল্লাহি আলহামদুলিল্লাহি”, “আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইহা রাসূলুল্লাহ, আল্লাহুম্মাগফিরলি জুনুবি, আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রাহমাতিক”। ইহাতে অসংখ্য গুনাহ মাফ হয় ও অশেষ নেকি লাভ হয়।
২৬। মসজিদ হইতে বাহির হইবার সময় প্রথমে বাম পা দিয়া পাঠ করিবে, “বিসমিল্লাহি আলহামদু লিল্লাহি আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ, আল্লাহুমা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিকা”। ইহাতে অসংখ্য গুনাহ মাফ হয় ও অসংখ্য নেকি লাভ হয়।
২৭। মসজিদ দেখিলে পাঠ করিবে, “আল্লাহুম্মাগফিরলি জুনুবি ওয়া খাতায়ি ওয়া আমাদি” । ইহাতে অসংখ্য গােনাহ মাফ হয় ও অসংখ্য নেকি লাভ হয়।
২৮। মিছওয়াক করিবার পূর্বে পড়িবে “আল্লাহুম্মা বারিকলী ইয়া আরহামার রাহিমিন।” ইহাতে অনেক বরকত ও সওয়াব লাভ হয়।
২৯। শুইবার সময় ‘বিসমিল্লাহি” বলিয়া দরজা বন্ধ করিলে আল্লাহপাক পাঠকারীকে যাবতীয় দুর্ঘটনা হইতে নিরাপদে রাখেন।
৩০। জানমাল হিফাজতে বা নিরাপদে থাকার জন্য পাঠ করিবে ‘বিসমিল্লাহি আলা নাফছি ওয়াহলি ওয়ামালি”।
৩১। উপরের দিকে উঠিতে “আল্লাহু আকবার” এবং নিচের দিকে নামিতে “সুবাহানাল্লাহ” পাঠ করিবে। ফলে অনেক সওয়াব মিলিবে।
৩২। আল্লাহর নাম শুনিয়া “জাল্লা সানুহু’ বলিবে ও রাসূলুল্লাহর নাম শুনিয়া “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলিবে। ইহাতে অসংখ্য সওয়াব লাভ হইবে।
৩৩। দোজখ হইতে মুক্তি পাওয়ার জন্য সকাল সন্ধ্যায় সাতবার পড়িবে । “আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার”।
৩৪। কবরের আজাব হইতে বাঁচার জন্য পড়িবে, “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবরে।”
৩৫। ভূমিকম্পের সময় ও বিপদ আপদ হইতে রক্ষার জন্য পড়িবে “লাইলাহা ইল্লাআনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজজুয়ালিমিন।
৩৬। খাওয়ার শুরুতে বলিবে “বিসমিল্লাহি ওয়াআলা বারাকাতিল্লাহ ও খাওয়ার পরে “আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আতায়ামানা ওয়াসাকানা ওয়াজাআলানা মিনাল মুসলিমিন”। ইহাতে অনেক সওয়াব লিখিত হয়। হাদিসে আছে একটি রােযা রাখার সমতুল্য নেকী তাহার আমলনামায় লিখা হয়। আর খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলিতে ভুলিয়া গেলে পরে স্মরণ হইলে পড়িবে “বিসমিল্লাহি আওওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু।
৩৭। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি খাওয়ার শেষে এই দোয়া পড়ে তাহার আগের ও পরের গুনাহ্ মাফ হইয়া যাইবে।
“আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আতআমানী হাযাতােআমা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাওলি-মিন্নী ওয়ালাকুউওয়াতুন। “
৩৮। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলিয়াছেন , যে ব্যক্তি কোন কাপড় পরিধান করিয়া নিম্নের এই দোয়া পড়ে তাহার আগের ও পরের গুনাহ্ মাফ হইয়া যাইবে।
” আল হামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানী হাযা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাওলি-মিন্নী ওয়ালাকুউওয়াতুন।”
৩৯। কোন যানবাহনে চলমান সময়ে পাঠ করিবে “সূবহানাল্লাজি ছাখখারা লানা হাজা ওমা কুন্না লাহু মুকরেনীন ওয়া ইন্না রাব্বিনা-লামুনকালিবুন” এবং নৌযানে আরােহণ করিলে পাঠ করিবে, “বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরছাহা ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম।” ইহাতে অনেক সওয়াব লাভ হয় ও গােনাহ্ মাফ হয়।
৪০। মন খারাপ থাকিলে “আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লিহালীন” পাঠ করিবে। তাহাতে মন প্রফুল্ল থাকিবে, সেই সাথে নেকিও হইবে।
৪১। পিতামাতার জন্য “রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী ছাগীরা” পাঠ করিয়া মােনাজাত করিলে উভয়ের গুনাহ মাফ হয় ও নেকি লিখা হয়।
৪২। পায়ে ঝিনঝিনি রােগ দেখা দিলে “মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” পড়িলে ঝিনঝিনি দূর হয়।
৪৩। মুয়াজ্জিন আজানে যখন বলিবে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ তখন “কুররাতু আইনি বিকা ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” পাঠ করিয়া দু’হাতে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করতঃ উহা দ্বারা চক্ষু মুছিয়া দিলে সমস্ত পাপ ঝরিয়া পড়িবে এবং চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পাইবে, যাবতীয় চক্ষু রােগ দূর হইবে এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শাফায়াত নসীব হইবে।
৪৪। মুসাফাহ করিবার সময় বলিবে, “ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। ইহাতে সমস্ত পাপ ঝরিয়া পড়িবে ও অশেষ নেকি লাভ হইবে।
৪৫। সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ লাগিলে বলিবে, “আল্লাহু আকবার”, ইহাতে বিপদাপদ দুর হইবে।
৪৬। প্রত্যেহ নামাজ বাদ মাথায় হাত রাখিয়া “ইয়া কাবিউ”এগার বার পাঠ করিলে মাথা ব্যথা দূর হয় ও স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পাইবে।
৪৭। প্রত্যেহ ‘আন্নাফিউ” পাঠের আমল করিলে ব্যবসায়ে প্রচুর লাভ ও ডাক্তারের হাত যশ বৃদ্ধি পাইবে।
৪৮। সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠের আমলের দ্বারা যাদুটোনা, ঝড়-তুফান, বান মারা ও শয়তানের শত্রুতা হইতে রক্ষা পাওয়া যায় ও অনেক নেকি লাভ করা যায়।
৪৯। যে ব্যক্তি জুম্মার দিন বাদ জুম্মা “ইয়া গাফফারুগ ফিরলি জুনুবী”একশত বার পড়িবে তাহার সমস্ত গুনাহ্ মাফ হইয়া যাইবে।
৫০। কোন কঠিন কাজ সহজ হইবার জন্য “বাছিরুম বিল ইবাদ” পাঠ করিবে।