জুমার দিন ইসলামে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। হাদিসে একে ‘ঈদুল আযহা’ ও ‘ঈদুল ফিতরের’ দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। এ দিনে দোয়া কবুল হয়, গুনাহ মাফ হয় এবং জুমার নামাজে অসীম ফজিলত রয়েছে। তাই জুমা মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে গণ্য।
জুমার দিন ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশী মর্যাদাবান
জুমু’আর দিনের মর্যাদা: হযরত আবু লুবাবা ইবনে আবদুল মুনযির (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, জুমু’আর দিন সকল দিনের সরদার। আল্লাহর নিকট সকল দিনের চেয়ে মর্যাদাবান। ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশী মর্যাদাবান।
জুমার : ফজিলতগুলো দিবসে সে এমতাবস্থায় উপস্থিত হবে যে তার সঙ্গে সাক্ষীরা থাকবে। তারা তার জান্নাতের জন্য সাক্ষী দেবে। অথবা তার ওপর মোহর থাকবে। (শরহুস সুদুর : ২০৯) পবিত্র রমজানে মৃত্যুবরণকারীদের সম্পর্কেও বিশেষ ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
যেমন একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যে মুসলমান রমজানে মৃত্যুবরণ করবে তার কবর আজাব হবে না। জুমার দিনে দোয়া কবুল হয় বলেও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আমর ইবনে আওফ আল মুযানী (রা.) থেকে বর্ণিত।
আরও পড়ুন >> সূরা ইখলাস ও সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমুহ
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে কোনো বান্দা যদি সেই মুহূর্তে আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চায় তাহলে আল্লাহতায়ালা তাকে অবশ্যই তা দান করবেন। (তিরমিজি) জুমার দিনের দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে অন্য একটি হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, জুমার দিনের যে মুহূর্তে দোয়া কবুলের আশা করা যায় তোমরা সে মুহূর্তটিকে বাদ আসর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান কর। (তিরমিজি)
জুমার দিনের কিছু আমল:
১। জুমার দিন গোসল করা। যাদের ওপর ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল সা. ওয়াজিব বলেছেন।
২। জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩। মিস্ওয়াক করা।
৪। উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
৫। মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৬। মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা এবং খুত্বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
৭। আগে থেকেই মসজিদে যাওয়া।
৮। সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
বিস্তারিত জানতে Google News এর সঙ্গে থাকুন
৯। জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
১০। নিজের সবকিছু চেয়ে এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা।
১১। কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন‘ এতোটুকুও না বলা।
১২। মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা।
১৩। খুত্বার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু ইচ্ছা করেই জুমার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে দেরীতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৪। এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে।
শিশুদের যে সব নাম রাখা হারাম
জুমু’আর দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য:
১। এই দিনে আদম (আ:)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে।
২। এই দিনে আল্লাহ্ তা’আলা আদম (আ:)-কে দুনিয়াতে নামিয়ে দিয়েছেন।
৩। এই দিনে আদম (আ:) মৃত্যুবরণ করেছেন।
৪। এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যে সময়ে হারাম ছাড়া যে কোন জিনিস প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা প্রদান করেন।
৫। এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। তাই আসমান, যমীন ও আল্লাহর সকল নৈকট্যশীল ফেরেশতাজুমু’আর দিনকে ভয় করে।