অহংকার পতনের মূল।এই কথাটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত।অহংকার শুধু পতনের মূলই নয় বরং অহংকারির স্থানও জাহান্নাম।কোরআন ও হাদিসে আল্লাহ তা’লা ও তার প্রিয় রাসুল এই অহংকার সম্পর্কে আনেক বার বলেছেন। কিন্তু আমাদের সমাজের কিছু মানুষ আছে জারা অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সার্টিফিকেট, জ্ঞান-গরিমা, বংশ মর্যাদা ইত্যাদি কারণে অহংকারে ফেটে পড়ে, মানুষকে ঘৃণা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এবং নিজের আমিত্ব বজায় রাখতে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে।
অহংকার সম্পর্কে আল্লাহ তা’লা বলেনঃ-
১। অহংকার সাজে কেবল আল্লাহর:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আল্লাহ বলেন, “মর্যাদা আমার লুঙ্গি আর অহংকার আমার চাদর। কেউ এ দুটির কোন একটি নিয়ে টানাটানি করলে তাকে আমি আযাবে নিক্ষেপ করব।” (হাদিস কুদসী-সহীহ মুসলিম)
২। দুর্বলের এত অহংকার কেন?
আল্লাহ তাআলা বলেন:
“অহংকার করে জমিনে চলা ফেরা কর না। কারণ, তুমি তো (পায়ের আঘাতে) মাটি বিদীর্ণ করতে পারবেনা বা দৈর্ঘ্যে পাহাড়ের সমানও হতে পারবে না।” (সূরা ইসরাঃ ৩৭ ও ৩৮)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
“অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। চলা ফেরায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন কর এবং আওয়াজ নিচু করে কথা বল। নিশ্চয় সবচেয়ে অ পছন্দনীয় আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ।” (সূরা লোকমান: ১৯-১৮)
হাদিসের ব্যাখ্যা:
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ-
“যার মনে বিন্দু মাত্র অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, মানুষ তো চায় তার জামা-কাপড় সুন্দর হোক, জুতা সুন্দর হোক। তিনি বললেন: আল্লাহ নিজে সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার হল, সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় মনে করা। (সহীহ মুসলিম)
অন্য বর্ণনায় এসেছে: “যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে সে জাহান্নামে যাবে না। আর যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে যাবে না।” (সহীহ মুসলিম)
“যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে সে জাহান্নামে যাবে না।” এ কথাটির অর্থ হল, সে চিরস্থায়ীভাবে থাকার জন্য জাহান্নামে যাবে না। (বরং সারা জীবনের পাপাচারের শাস্তি ভোগ করার পর তার অন্তরে সামান্যতম ঈমান থাকার কারণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে)। (ইবনুল আসীর জামিউল আসার কিতাবে এ কথা উল্লেখ করেছেন)।
অহংকারীদের কঠিন পরিণতি:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “দুনিয়াতে যারা অহংকার করতো কিয়ামতের দিন তাদের হাশর হবে মানুষ আকৃতিতে ভুট্টার দানার মত অতি ক্ষুদ্রকায় অবস্থায়। তাদেরকে চারিদিক থেকে লাঞ্ছনা ও তিরস্কার ঘিরে ধরবে। এমতাবস্থায় জাহান্নামের জেলখানার দিকে তাদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। (সে জেলখানাটির নাম বুলিস)। আনিয়ার নামক আগুন এসে তাদেরকে গ্রাস করবে আর পাপীষ্ঠ জাহান্নামীদের রক্ত-পুঁজ তাদেরকে পান করানো হবে।” (তিরমিযী।