শিশুদের দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখার সম্পূর্ণ গাইড
দাঁত ওঠার পর থেকেই সঠিক যত্ন নিলে দাঁত ও মাড়ি আজীবন সুস্থ থাকে। যেমন বড়দের নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, তেমনি শিশুদেরও দাঁত ও মাড়ি সুস্থ এবং দাঁত ক্ষয়মুক্ত রাখতে নিয়মিত যত্নের প্রয়োজন। শিশুদের দাঁতের যত্নে বড়দের তুলনায় কিছুটা ভিন্নতা থাকে।
শিশুদের দাঁতের বৃদ্ধি
-
সাধারণত ১২ বছরের আগে শিশুদের ওপর ও নিচের চোয়াল মিলিয়ে ২০টি দুধদাঁত ওঠে।
-
এরপর ২৮টি স্থায়ী দাঁত এবং পরবর্তীতে ৪টি আক্কেল দাঁত বৃদ্ধি পায়।
-
দাঁত ওঠার পর থেকেই সঠিক যত্ন নিলে দাঁত ও মাড়ি আজীবন সুস্থ থাকবে।
কিভাবে ব্রাশ করাবেন
-
ছয় মাস বয়সের শিশু: ব্রাশ করা যাবে না, তাই পাতলা শুঁতি কাপড় দিয়ে দাঁতের মাড়ি ও নতুন দাঁত পরিষ্কার করুন।
-
৩ বছর থেকে: শিশুকে দিনে ২ বার (সকাল ও রাতের খাবারের পরে) দাঁত ব্রাশ করানো উচিত।
-
টুথব্রাশ নির্বাচন: ছোট শিশুর জন্য নরম (সিলিকন) ব্রিসলের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন। ইলেকট্রনিক টুথব্রাশও ব্যবহার করা যেতে পারে, এতে শিশুরা আনন্দ পায় এবং ব্রাশ করার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।
-
টুথপেস্ট: মটরদানার পরিমাণ ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন, যা দাঁতের ক্যাভিটি কমায়।
-
অভিভাবকরা অবশ্যই সতর্ক থাকুন: বেশি পেস্ট ব্যবহার করা বা খেয়ে ফেলা থেকে বিরত থাকুন। ৬–৭ বছর বয়স পর্যন্ত ব্রাশ করার সময় শিশুদের সাহায্য করুন।
খাওয়ার অভ্যাস
-
মিষ্টি খাবার সীমিত করুন: চকলেট, আইসক্রিম, মিষ্টি পানীয়ের পরিমাণ কমাতে হবে।
-
চিনি খাওয়ার পরে: দাঁত ব্রাশ বা কুলি করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
-
ঘুমের আগে দুধ: দাঁত ব্রাশ করা জরুরি, অন্যথায় দুধে থাকা প্রাকৃতিক চিনি দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।
-
পানি ও ফল: শিশুদের বেশি পানি পান করতে দিন। আঁশযুক্ত ফল যেমন পেয়ারা, আপেল খাওয়ানো ভালো, যা প্রাকৃতিক ক্লিনার হিসেবে কাজ করে।
অলসতা সকল অনর্থের মূল ।। ভাবসম্প্রসারণ
শিক্ষার গুরুত্ব একটি প্রবন্ধ/রচনা লিখ। ক্লাস ৮ম থেকে ১০ম
ডাক্তার দেখানোর সময়
-
শিশুর প্রথম দাঁত ওঠার ৬ মাসের মধ্যে বা ১ বছরের মধ্যে দাঁতের ডাক্তারের কাছে প্রথমবার দেখানো উচিত।
-
এরপর প্রতি ৬ মাসে একবার রুটিন চেকআপ করানো ভালো।
এড়িয়ে চলার বিষয়
-
শিশুদের মুখে বিভিন্ন বস্তু চুষতে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন (যেমন বোতলের ঢাকনা, খেলনা)।
-
নিপল বোতল বা প্যাকেট জুস দিয়ে ঘুমাতে দেওয়া যাবে না, কারণ এতে দাঁতের ওপর দীর্ঘ সময় চিনি থাকে।
অভ্যাস গড়ার কৌশল
-
ব্রাশ করার সময় গান গাওয়া বা খেলার ছলে শেখানো যেতে পারে।
-
পরিবারে সবাই একসঙ্গে দাঁত ব্রাশ করলে শিশুরা অনুসরণ করে।
-
শিশুদের দাঁত ব্রাশ করার কার্টুন দেখিয়ে আগ্রহী করা যায়।
সতর্কতা ও করণীয়
-
নিয়মিত ব্রাশ না করা বা চিনিযুক্ত খাবার বেশি খেলে দাঁতে কালচে বা বাদামি দাগ দেখা দিতে পারে।
-
দাঁতে ব্যথা বা ফোলা দেখা দিলে অবহেলা না করে ডাক্তারকে দেখানো জরুরি।
শিশুদের দাঁত ও মাড়ি সুস্থ্য রাখতে যা করা যাবে না
-
চকলেট খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমানো।
-
দিনে অনেকবার মিষ্টি খাওয়া।
-
বিস্কুট ও কেকজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খাওয়া।
-
দাঁত দিয়ে চিপসের প্যাকেট খোলা বা বাদাম ছোলা।
-
খুব টক খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশ করা।
-
খুব গরম ও ঠান্ডা খাবার একসাথে খাওয়া।
এইভাবে শিশুর দাঁতের যত্নের নিয়ম মেনে চললে, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকবে এবং ভবিষ্যতে বিভিন্ন দাঁতের সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।