পরকীয়া প্রেমিকের নিদের্শেই ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভ্যান চালক আব্দুর রহিমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে এবং আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্তরা।
গতকাল সোমবার দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশের সিংড়া সার্কেলের সিনীয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ জামিল আক্তার। এর আগে ভ্যান চালাতে এসে ২৪ মে সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন আব্দুর রহিম। পরে নাজিরপুরের একটি ভুট্টা খেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আব্দুর রহিমের বাড়ি গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর নতুনপাড়া গ্রামে। তিনি পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন।
সহকারি পুলিশ সুপার বলেন, মালয়েশিয়া প্রবাসী রায়হানের সাথে নিহত আব্দুর রহিমের স্ত্রীর দীর্ঘদিনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। রায়হান মালয়েশিয়া যাওয়ার পর পরকীয়ার সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ট হয়। দেশে এসে বিয়ের আশ্বাসও দেন। একপর্যায়ে প্রবাসী রায়হানের কাছ থেকে ২ লাখ টাকায় জমি লিজ নেন আব্দুর রহিমের স্ত্রী।
আরও পড়ুন >> সিংড়ায় জিয়াউর রহমান এর শাহাদত বার্ষিকী পালিত
তবে স্ত্রীর পরকীয়া আর জমি লীজের বিপক্ষে ছিলেন আব্দুর রহিম। সম্প্রতি রায়হানের কাছে লিজের টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিয়েছিলেন আব্দুর রহিম। এতে রহিমের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন প্রবাসী রায়হান। একপর্যায়ে মালয়েশিয়া থেকেই আব্দুর রহিমকে খুনের পরিকল্পনা করেন রায়হান।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বলেন, প্রবাসী রায়হান তার পূত্র লিটন সরকার (১৯), চাচাতো ভাই আব্দুল হান্নানের (৪১) কাছে খুনের পরিকল্পনার কথা বলেন। রায়হানের কথায় খুনের জন্য লিটন ও হান্নান ভাড়াটে খুনি খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মাদকাসক্ত বিপ্লবের (৩৫) সাথে ১০ হাজার টাকায় খুনের চুক্তি হয়।
তিনি বলেন, আব্দুর রহিমকে খুন করার জন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা ও রায়হান দেশে আসার পর অভিযুক্ত বিপ্লবকে একটি বাড়ি ও যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহনের প্রলোভন দেখান। এতে রাজি হন বিপ্লব। একপর্যায়ে ২৪ মে নাজিরপুর কলেজ গেট থেকে পতিতা নারীর প্রলোভন দেখিয়ে আব্দুর রহিমকে ভুট্টা খেতে নিয়ে যান বিপ্লব, হান্নান ও লিটন।
সেখানে প্রথমে হান্নান রহিমকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে পা চেপে ধরেন। এরপর ভাড়াটিয়া খুনি বিপ্লব দুই হাত ধরে বুকের ওপর ওঠে বসেন। এসময় মোটরসাইকেলের ক্লাসের তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসসরোধে হত্যা করেন লিটন।
ওসি বলেন গুরুদাসপুর থানার তিনটি টিম রহস্য উদঘাটনে কাজ করেছে। প্রথমে ভাড়াটে খুনি বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ অপর দুইজনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে। হত্যাকান্ডটি নিয়ে পুলিশ অধিক তদন্ত করছে।
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি