নামাযের ফরজসমূহ:
নামাযের বাহিরে এবং ভিতরে ১৩ ফরজ
নামাজের বাহিরে ৭ ফরজ :
১। শরীর পাক।
২। কাপড় পাক।
৩। নামাযের জায়গা পাক।
৪। সতর ঢাকা।
৫। কিবলামুখী হওয়া।
৬। ওয়াক্ত মত নামায পড়া।
৭। নামাযের নিয়ত করা।
নামাযের ভিতরে ৬ ফরজ :
১। তাকবীরে তাহরীমাহ্ বলা।
২। দাঁড়াইয়া নামায পড়া।
৩। কিরাআত পড়া।
৪। রুকু করা।
৫। দুই সিজদা করা।
৬। আখিরী বৈঠক।
নামাযের ওয়াজিব ১৪টি :
১। আলহামদু শরীফ (সুরায়ে ফাহিতা) পুরা পড়া।
২। সূরা ফাতিহার সঙ্গে সূরা মিলানাে।
৩। রুকু-সিজদায় দেরী করা।
৪। রুকু হইতে সােজা হইয়া খাড়া হওয়া।
৫। দুই সিজদার মাঝখানে সােজা হইয়া বসা।
৬। দরমিয়ানী বৈঠক (দুই রাকাআতের পর বসা)।
৭। উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া।
৮। ইমামের জন্য : কিরআত আস্তে এবং জোরে পড়া।
৯। বিতিরের নামাযে দু’আয়ে কুনূত পড়া।
১০। দুই ঈদের নামাযে ছয় ছয় তাকবীর বলা।
১১। ফরজ নামাযের প্রথম দুই রাকআতকে কিরাআতের জন্য ও নির্ধারিত করা।
১২। প্রত্যেক রাক’আতের ফরজগুলির তারতীব ঠিক রাখা।
১৩। প্রত্যেক রাকাআতের ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা।
১৪। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্ (সালাম) বলিয়া নামায শেষ করা।
মাসআলা
* সূর্যোদয়ের সময়, দুপুর বেলা মাথার উপর সূর্য থাকার সময় এবং সূর্যাস্তের সময়ে কোন প্রকার নামাযই পড়া জায়েয নাই। তবে বিশেষ কারণে ঐ দিনের আসর নামায সূর্যাস্তের সময় পড়া যায় কিন্তু মাকরূহ হইবে।
* নামাযে যদি উক্ত ফরজসমূহের মধ্য হতে কোনটি ছুটে যায় তাহলে ঐ নামায বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় ঐ নামায পড়তে হবে।
* নামাজের ওয়াজিব সমূহের মধ্য হতে ভুলবশতঃ কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে অথবা কোন ওয়াজিব তার নির্ধারিত জায়গা থেকে সরে গেলে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়।
নামাযের সুন্নতসমূহ:
নামাযে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ ১২টি
১। দুই হাত উঠানাে।
২। দুই হাত বাঁধা।
৩। ছানা পড়া।
৪। আউজুবিল্লাহ পড়া।
৫। বিসমিল্লাহ্ পড়া।
৬। আলহামদুর শেষে আমীন বলা।
৭। প্রত্যেক উঠা বসায় আল্লাহু আকবর বলা।
৮। রুকুর তাসবীহ্ পড়া।
৯। রুকু হইতে উঠিবার সময় সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ বলা।
১০। সিজদার তাছবীহ্ পড়া।
১১। দুরূদ শরীফ পড়া।
১২। দু’আয়ে মাছুরাহ পড়া।
যে ভুলে নামায হয় না
শুদ্ধভাবে নামায আদায়ের জন্য নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে দেখানাে হলাে :
নামায আদায় করার সঠিক নিয়ম:
ফরজ নামাজগুলি দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ। সর্বপ্রথম সর্বাঙ্গ সােজা রেখে কিবলামুখী হয়ে দণ্ডায়মান হওয়া।
ক। দাড়ানাে অবস্থায় উভয় পা সমান্তরাল অর্থাৎ দু পায়ের মাঝখানে সমান ফাঁকা রাখা কমপক্ষে চার আংগুল, কিন্তু মেয়েলােকের জন্য দুই পা মিশিয়ে দাঁড়ানাে।
খ । তারপর উভয় হাতের তালু কিবলার দিকে রেখে কানের লতি বরাবর উঠানাে সুন্নত, অতঃপর তাকবীরে তাহরীমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা ফরজ। এবং নাভীর ঠিক নীচে হাত বাধা, হাত বাধার সময় বামহাত নীচে থাকবে আর ডান হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠাংগুল দ্বারা বাম হাতের কজি ধরবে আর বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের বাকী তিন আংগুল থাকবে। কিন্তু মেয়েলােকগণ বুকের উপর হাত বাধবে এবং হালকা ভাবে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখবে।
দাঁড়ানাে অবস্থায় চোখের দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা। তারপর ছানা পড়া সুন্নত, আউজুবিল্লা পড়া সুন্নত, বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত, সুরা ফাতিহা পুরাে পড়া ওয়াজিব। ফাহিতার » শেষে আমীন বলা সুন্নত। তারপর সুরা মিলানাের পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত। সুরা মিলানাে ওয়াজিব। রুকুতে যাওয়ার সময় আল্লাহু আকবার’ বলা সুন্নত। রুকু করা ফরজ। রুকুতে পিঠ, কোমর ও মাথা এক বরাবর রাখা এবং উভয় হাত দিয়ে উভয় হাটু ধরা সে সময় আঙ্গুলগুলি ফাক করে রাখা। মেয়েলােকগণ সামান্য ঝুকে রুকু আদায় করবে।
রুকুতে কমপক্ষে তিন বার তাছবিহ সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ * পড়া সুন্নত, রুকু হতে সােজা হয়ে দাঁড়ানাে ওয়াজিব।
নষ্ট হলে কবি- আশিকুজ্জামান জুয়েল
দাড়ানাের সময় সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলা তারপর ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলা সুন্নত। রুকুতে চোখের দৃষ্টি দুই পায়ের মধ্যভাগে রাখা। তারপর দুই সিজদা করা ফরজ। সিজদাতে যাওয়ার সময় আল্লাহু আকবার বলা সুন্নত। সিজদা করার সময় প্রথমে মাটিতে হাটু লাগবে তারপর হাত, তার পর নাক পরে কপাল। সিজদাতে কপাল, নাক এবং উভয় পা মাটিতে লাগানাে জরুরী এবং সিজদায় তিন বার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়া সুন্নত।
সেজদা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি নাকের দিকে নিবন্ধ রাখা এবং হাতের আংগুল গুলি মিশিয়ে রাখা। পেট রান হইতে আলাদা রাখা ও কুনুই মাটি থেকে আলাদা থাকবে। সেজদা হতে উঠার সময় সর্বপ্রথম কপাল তারপর নাক তারপর হাত উঠবে। সেজদায় মেয়েলােকগণ শরীর একেবারে মিশিয়ে সেজদা করবে।
প্রথম সিজদার পর সােজা হয়ে বসা ওয়াজিব। তার পর দ্বিতীয় সিজদা করা ফরজ। এইভাবে দুই রাকাত পূর্ণ হলে বসে আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করা ওয়াজিব। যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হয় তবে আত্তাহিয়্যাতুর পর দুরূদ শরীফ তার পর দোয়া মাসুরা পড়া সুন্নত। বসা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি হাতের উপর রাখা এবং আঙ্গুলগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা ও বাম পায়ের উপর বসে ডান পা খাড়া রেখে আঙ্গুল গুলি ভাজ করে কিবলামুখী করে রাখা।
প্রথমত, মেয়েলােকগণ বসা অবস্থায় নিতম্বের উপর বসবে এবং উভয় পা ডান দিকে বের করে দেবে।
তিন বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে আত্তাহিয়্যাতুর পর দাড়িয়ে বাকি রাকাতগুলি আদায় করবে। তারপর ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে প্রথম ডান দিকে পরে বাম দিকে সালাম ফিরাবে। সালাম ফিরানাের সময় মুসল্লি এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে। সালাম ফিরানাে ওয়াজিব। চালক তারপর দরূদ শরীফ ও ইস্তেগফার পাঠ করে মুনাজাত করবে। মুনাজাত করা নামাযের অংশ নয়।