নামাজের ফরজ, সুন্নত, ওয়াজিব ও মুস্তাহাব

Spread the love
নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে নামজের ফরজ,সুন্নত,ওয়াজিব,ও মুস্তাহাব গুলো সঠিকভাবে জানা জরুরি।হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সঠিকভাবে নামাজ আদায় করার সকল পদ্ধতি বলে গেছেন, আমাদের সকলের উচিত এগুলো মেনে ও জেনে নামাজ আদায় করা।

নামাজের ফরজঃ

নামাযে মােট ফরজ চৌদ্দটি।’
নামাযের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক সাতটি ফরজ রয়েছে। এগুলােকে নামাযের আহকাম বলা হয়।

১. শরীর পবিত্র হওয়া।
১. পরিধানের কাপড় পবিত্র হওয়া।
৩ নামাযের স্থান পবিত্র হওয়া। কমপক্ষে দাঁড়ানাের জায়গা থেকে সিজদাহর জায়গা পর্যন্ত পবিত্র হতে হবে।
৪. সতর ঢাকা। পুরুষের নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাতের কজি, পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা।
৫. কিবলামুখী হওয়া। কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে হবে। কিবলা অজানা অবস্থায় নিজের প্রবল ধারণা অনুযায়ী কিবলা নির্ধারণ করে নামায আদায় করবে।
৬. নামাযের সময় হওয়া।
৭. নিয়ত করা। যে ওয়াক্তের নামায আদায় করবে মনে মনে সেই ওয়াক্তের সময়ের নিয়ত করা। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভাষায় নিয়ত করতে পারবে।

নামাযের ভিতরে সাতটি ফরজ রয়েছে। এগুলােকে নামাযের আরকান বলা হয়।
১. তাকবিরে তাহরিমা : আল্লাহু আকবার বলে নামায আরম্ভ করা।
২. দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা। দাঁড়াতে অক্ষম হলে বসে এবং বসতে সক্ষম না হলে শয়নাবস্থায়। ইশারায় নামায আদায় করতে হবে।
৩. সূরা বা আয়াত তিলাওয়াত করা।
৪. রুকু করা।
৫. সিজদাহ করা ।
৬. শেষ বৈঠক: যে বৈঠকের মধ্যে তাশাহহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ।
করা হয় তাকেই শেষ বৈঠক বলে।
৭. সালামের মাধ্যমে নামায থেকে বের হওয়া।

সালাতের সুন্নতঃ

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, “তােমরা নামায আদায় কর, যেমনিভাবে আমাকে নামায আদায় করতে দেখেছ।’ (বুখারি)।
রাসুলুল্লাহ (স.) নামাযের মধ্যে ফরজ ওয়াজিব ছাড়াও কিছু আমল বা কাজ করেছেন কিন্তু এগুলাে আদায়ের ব্যাপারে ফরজ ওয়াজিবের ন্যায় তাগিদ করেননি। এগুলােকে বলা হয় সুন্নত। সালাতের সুন্নত একুশটি।

আরও পড়ুন >> সূরা ইখলাস ও সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমুহ

১. তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় পুরুষের কানের লতি ও নারীদের কাধ পর্যন্ত দুই হাত উঠানাে।
২. তাকবির বলার সময় দুই হাতের আঙ্গুলগুলাে খুলে রাখা এবং কিবলামুখী করে রাখা।
৩. নিয়ত করার পর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা। পুরুষের জন্য নাভির উপর এবং নারীর জন্য বুকের উপর হাত রাখা।
৪. তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় মাথা অবনত না করা।
৫. ইমামের জন্য জোরে তাকবির বলা।
৬. সানা। পড়া।
৭. আউযুবিল্লাহ পড়া।
৮. প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পূর্বে মনে মনে বিসমিল্লাহ্ পড়া।
৯. ফরজ নামাযের তৃতীয়, চতুর্থ রাকআতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়া।
১০. ফাতিহার পর আমিন বলা।
১১. সানা, আউযুবিল্লাহ, আমিন আস্তে বলা।
১২. এক রুকন থেকে অন্য রুকনে যাওয়ার সময় তাকবির বলা।
১৩. রুকু এবং সিজদায় তাসবিহ পড়া।
১৪. রুকুতে মাথা ও কোমর সােজা রাখা এবং দুই হাতের আঙ্গুল দিয়ে উভয় হাঁটু ধরা।
১৫. রুকু থেকে উঠে দাড়ানাে অবস্থায় ইমামের ‘সামি আল্লাহুলিমান হামিদাহ্ ও মুক্তাদির রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলা ।
১৬. সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাঁটু, তারপর দুই হাত, তারপর । নাক এবং সর্বশেষ কপাল মাটিতে রাখা।
১৭. বসার সময় বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা এবং ডান পা খাড়া রাখা।
১৮. তাশাহহুদে লা-ইলাহা এর লা’ উচ্চারণের সময় শাহাদাত আঙ্গুল উঠানাে।
১৯. শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর দরুদ পড়া ।
২০. দরুদের পর দোয়া মাসূরা বা এই জাতীয় কোনাে দোয়া পড়া।
২১. প্রথমে ডানে এবং পরে বামে সালাম ফেরানাে ।

সালাতের ওয়াজিবঃ

নামাযের ওয়াজিব বলতে এমন সব জরুরি বিষয় বােঝায় যার কোনাে একটি ভুলবশত ছুটে গেলে সিজদায়ে সাহু দ্বারা নামায শুদ্ধ করতে হয়। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে নামায (ফাসিদ) ভঙ্গ হয়ে। যায় এবং পুনরায় নামায আদায় করতে হয়।নামাযের ওয়াজিব চৌদ্দটি।

১. প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা পড়া ।
২. সূরা ফাতিহার সাথে কোনাে একটি সূরা বা সূরার অংশবিশেষ পাঠ করা ।
৩. রুকু, সিজদাহ ও তিলাওয়াতের আয়াতগুলাের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা ।
৪. নামাযের রুকনগুলাে সঠিকভাবে আদায় করা।
৫. রুকু করার পর সােজা হয়ে দাঁড়ানাে।
৬. দুই সিজদার মাঝখানে সােজা হয়ে বসা।
৭. প্রথম বৈঠক অর্থাৎ তিন বা চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযে দুই রাকআত পড়ার পর তাশাহহুদ
পড়ার জন্য বসা।
৮. তাশাহহুদ পাঠ করা ।
৯. ইমামের জন্য উচ্চস্বরে তিলাওয়াতের স্থলে উচ্চস্বরে এবং চুপে চুপে তিলাওয়াতের স্থলে
চুপে চুপে তিলাওয়াত করা।
১০. বিতর নামাযে দোয়া কুনুত পাঠ করা ।
১১. নামাযের মধ্যে সিজদাহর আয়াত পড়লে তিলাওয়াতে সিজদাহ করা।
১২. সিজদাহর মধ্যে উভয় হাত ও হাঁটু মাটিতে রাখা ।
১৩. দুই ঈদে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।
১৪. আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে নামায শেষ করা ।

সালাতের মুস্তাহাবঃ

নামাযে এমন কিছু কাজ আছে যা মেনে চললে সাওয়াব পাওয়া যায়,কিন্তু ছেড়ে দিলে গুনাহ হয় না এগুলােকে বলা হয় মুস্তাহাব।সালাতের মুস্তাহাব ৭টি

১. নামাযে দাঁড়ানাে অবস্থায় সিজদাহ্ স্থানে দৃষ্টি রাখা।
২. রুকুর সময় পায়ের উপর, সিজদাহর সময়। নাকের উপর এবং বসা অসস্থায় কোলের উপর দৃষ্টি রাখা।
৩. হাঁচি এলে, হাই উঠলে, কাশি এলে। যথাসম্ভব চেপে রাখার চেষ্টা করা।
৪. ধীরস্থিরভাবে কুরআন পাঠ করা।
৫. সিজদাহর সময় উভয় হাতের মধ্যস্থানে মাথা রাখা।
৬. মাগরিবের নামাযে ছােট সূরা পাঠ করা।
৭. একা একা নামায আদায়কালে রুক সিজদায় তাসবিহ তিনবারের বেশি (পাঁচ, সাত, নয় ইত্যাদি) পড়া।

আরও পড়ুন >>  ১০০/- টাকার প্রাইজবন্ড ড্র ।। Prize Bonds Result

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *