উযূ মাকরূহ সহি মাসায়েল সম্পর্কে প্রতিটি মুসলমানের জানা জরুরী এবং উযু মাকরূহ বিষয়ে ইসলামের নানাবিধ বিষয় আলোচনা করা আমাদের এই পাঠ্যবিষয়ের মৌখিক বিষয় সমুহ:
যে সব কারণে উযূ মাকরূহ হয়
নিম্নলিখিত কার্যগুলো উযূতে করলে উযূ মাকরূহ হয় অর্থাৎ, করলে উযূ ভঙ্গ হয় না ছওয়াবও হয় না ।
১. তারতীব অনুযায়ী উযূ না করলে।
২. অপবিত্র স্থানে বসে উযূ করলে ।
৩. অতিরিক্ত পানি ব্যয় করলে ।
৪. উযূতে রত থাকা অবস্থায় জাগতিক কথাবার্তা বললে। তবে কোন বিশেষ প্রয়োজনে দু একটি কথা বললে কোন আপত্তি নেই ।
৫. মুখ অথবা অন্য কোন অঙ্গে জোরে পানি মারলে ।
৬. মুখে পানি দেয়ার সময় শুরশুর শব্দ বেরিয়ে আসলে ।
৭. তিন বারের অধিক কোন অঙ্গ ধৌত করলে কিংবা অঙ্গগুলো একবার ধুয়ে ধুয়ে মুছে ফেললে । তবে কোন কারণবশত: এরূপ করলে কোন দোষ নেই। বিনা কারণে করা ঠিক নয়।
৯. ডান হাতে নাক পরিষ্কার করা ।
১০. প্রথমে বাম হাত অথবা বাম পা ধৌত করা ।
ভিডিও >> সুরাতুল আসর তাফসীর ।। সুন্দর বর্ণনা ।। হাফেজ মোহাম্মদ আলী
যে সব কারণে উযূ ভাঙ্গে না
কোন কোন কারণে উযূ ভঙ্গ হয় না, তবে সাধারণ্যে উযূ ভঙ্গ হয় বলে খ্যাত । যেমন :
১. বসে বসে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে উযূ ভঙ্গ হয় না ।
২. নামাযের সাজদায় তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়লে উযূ ভঙ্গ হয় না। তবে তন্দ্রায় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শিথিল হয়ে এক অঙ্গ অন্য অঙ্গের সাথে মিশে গেলে, যেমন কনুই উরুর সাথে মিশে গেলে অথবা উরু পেটের মাথে মিললে উযূ ভঙ্গ হয়ে যায় । তবে মেয়েলোক এর ব্যতিক্রম।
৩. নামাযের মধ্যে মুচকি হাসি দিলে উযূ ভঙ্গ হয় না । (উযূ মাকরূহ সহি মাসায়েল)
৪. উযূ করার পর স্ত্রীলোক তার সন্তানকে দুধ পান করালে অথবা স্তন থেকে দুধ নিংড়িয়ে ফেললেও উযূ ভঙ্গ হয় না ।
৫. স্বীয় অথবা স্ত্রীলোকের যৌনাঙ্গে দৃষ্টিপাত করলেও উযূ ভঙ্গ হয় না। তবে ইচ্ছাকৃত এরূপ করা ভাল নয়৷
৬. পুরুষ এবং স্ত্রীলোকের শরীর স্পর্শ করলে অথবা চুম্বন করলে উযূ ভঙ্গ হয় না ।
৭. উযূ করার পর লজ্জাস্থানে হাত লাগলে উযূ নষ্ট হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ করা মাকরূহ।
৮. উযূ করার পর নখ কাটলে অথবা পায়ের চামড়া কাটলে অথবা উপড়ালে উযূ ভঙ্গ হয় না !
৯. বিড়ি সিগারেট সেবন করলে উযূ ভঙ্গ হয় না ।
১০. সতর খুললে উযূ ভঙ্গ হয় না ।
১১. কারও সতর দেখলে উযূ ভঙ্গ হয় না ।
বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন
যে সব কারণে উযূ ভেঙ্গে যায়
১. প্রস্রাব, পায়খানা করা ।
২. পিছনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বেরিয়ে আসা ।
৩. প্রস্রাব পায়খানা ব্যতীত অন্য কোন বস্তু যেমন কেঁচো, ক্রিমি, পাথরকণা ইত্যাদি অথবা এগুলো ছাড়াও যদি অন্য কোন বস্তু পেশাব অথবা পায়খানার রাস্তা দিয়ে নির্গত হয়, তখন উযূ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
৪. শরীরের অন্য কোন স্থান থেকে রক্ত, পুঁজ ইত্যাদি বেরিয়ে গড়িয়ে গেলে ।
৫. বমি ছাড়াও রক্ত, পিত্ত, খাদ্য অথবা পানি মুখ ভরে নির্গত হলে উযূ ভঙ্গ হবে। এ সমস্ত বস্তু অল্প অল্প করে কয়েক বার নির্গত হলেও উযূ ভঙ্গ হবে যদি সব বারেরটা একত্রে হলে মুখ ভরা পরিমাণ হত বলে মনে হয় ।
৬. থুতুতে রক্তের পরিমাণ বেশী হলে কিংবা উযূ করার সময় দাঁতের মাড়ি থেকে
রক্ত বেরিয়ে আসলে উযূ ভঙ্গ হবে। রক্তের পরিমাণ অল্প হলে কোন ক্ষতি নেই তবে রক্ত অধিক পরিমাণে হলে অর্থাৎ থুথু থেকে রক্তের পরিমাণ বেশী হলে রক্ত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত উযূ করতে পারবে না ।
৭. বীর্য, মুযী অথবা হায়েযের রক্ত দেখা দিলে উযূ ভঙ্গ হয়ে যাবে। এর বর্ণনা গোসল অধ্যায়ে করা হবে। উল্লেখ্য যে, বীর্য ও মুজীতে পার্থক্য আছে-যৌন সম্ভোগের সময় তৃপ্তি হওয়ার প্রাক্কালে অথবা ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে যা নির্গত হয় তা হলো বীর্য আর পুংলিঙ্গের চটপটে ভাব দ্বারা অথবা স্ত্রীলোককে চুম্বন করায়
অথবা স্ত্রীলোকের নিকটবর্তী হওয়ায় অথবা কোন খারাপ ধারণার বশবর্তী হলে লিঙ্গের অগ্রভাগ দিয়ে পানির মত যে বস্তু বেরিয়ে আসে, তা হল মুযী। বীর্য বের হলে গোসল করা আবশ্যক হয় কিন্তু মুখী বের হলে গোসল করা আবশ্যক হয় না তবে উযু ভেঙ্গে যায় ।
৮. স্ত্রীলোকের স্তন থেকে বুকের দুধ ব্যতীত অন্য বস্তু বেরিয়ে আসলে এবং ব্যথা হলে উযূ ভঙ্গ হবে ।
৯. যোনির মধ্যে আঙ্গুল প্রবেশ করালে উযূ ভঙ্গ হয়ে যায় ।
১০. বেহুঁশ বা পাগল হলে । (উযূ মাকরূহ সহি মাসায়েল)
১১. নামাযের মধ্যে এ রকম শব্দ সহকারে হাসা যে, পার্শ্বের লোক সে শব্দ শুনতে পায় ।
অতএব প্রতিটি নরনারীকে কি কি কারণে উযূ মাকরূহ হতে পারে সে সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য জানা এবং সেরূপ মেনে চলা উচিত।
আরো পড়ুন >> বাংলাদেশর সেরা 5টি মোবাইল ব্যাংকিং। Mobile Banking