যারা নতুন বাড়ী নির্মাণ করবেন তাদের জানা উচিত

Spread the love

বাড়ী নির্মানের খুটিনাটি

যারা নতুন বাড়ী নির্মাণ করবেন – নতুন বাড়ী নির্মানের সময় প্রতিটি ব্যক্তির বাড়ী নির্মানের খুটি নাটি বিষয় জানা জরুরী। বাড়ী নির্মানে কি কি মালামাল লাগবে, কত টাকা খরচ হবে, কোন মালামাল ভাল এবং কোথায় পাওয়া যাবে। সকল বিষয় জানা থাকলে খরচ কম হবে আবার মান সম্মত বাড়ী নির্মান করা যাবে। নিজের বাড়ী নিজের স্বপ্ন পুরণ। ভবিষ্যত গড়তে বাড়ী নির্মান করার আগে এই সকল বিষয় জানা জরুরী।

ইটের হিসাব বাড়ী নির্মাণ
——————————————————-

> ১০” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি ০১’ (স্কয়ার ফিট) গাথুনীতে ১০ টি ইট লাগে।
> ০৫” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি ০১’ (স্কয়ার ফিট) > গাথুনীতে ০৫ টি ইট লাগে।
> গাথুনীর প্লাস্টারে ০১ বস্তা সিমেন্টে ০৪ বস্তা বালি। তবে ০৫ বস্তাও দেওয়া যায়।
> নিচের ছলিং এ প্রতি ০১’ (স্কয়ার ফিট) এর জন্য ০৩ টি ইট লাগে।

পিকেট ইট দিয়ে খোয়া করতে হয়
——————————————————-

> ০৯ টি পিকেট ইট দিয়ে ০১ সিএফটি খোয়া হয়।
> সিএফটি অর্থাৎ ঘনফুট।
এসএফটি অর্থাৎ দৈর্ঘ্য এবং প্রস্তের দিক দিয়ে।
কলাম এবং লিংটেল এর হিসাব সিএফটি তে করতে হয়।
ইঞ্চিকে প্রথমে ফুটে আনতে হবে। ( ১০” ÷ ১২ = ০.৮৩৩)
এবং গাথুনীতে ও প্লাস্টারের হিসাব এসএফটি তে করতে হয়।
* ১ ঘনমিটার ইটের গাথুনীর ওজন ১৯২০ কেজি।
* ১ ব্যাগ সিমেন্টে পানি লাগে ২১ লিটার।
* ১০০ এস,এফ,টি প্লাষ্টারে ১:৪ অনুপাতে

সিমেন্টর হিসাব বাড়ী নির্মাণ
——————————————————-

* গাথুনীর প্লাষ্টারে ১:৫ অনুপাতে সিমেন্ট
দিতে হয়।প্লাস্টারের ফ্রেশ সাইডে মসলার পুরুত্ব আধা ইন্চি এর রাফ সাইডে মসলার পুরুত্ব পনে এক ইঞ্চি বা 15 মিমি . . সিলিং প্লাষ্টারে ১:3 অনুপাতে সিমেন্ট দিতে হয়। এবং মসলার পুরুত্ব 6-7 মিমি . . বীম এবং কলাম সিলিং এর মতো
* প্রতি এস,এফ,টি নিট ফিনিশিং করতে =
০.০২৩৫ কেজি সিমেন্ট লাগে।
* মসলা ছাড়া ১ টি ইটের মাপ = (৯ ১/২”*৪
১/২”*২ ৩/৪”)

মসলাসহ = (১০”*৫”৩”)
10 mm =1 cm
100 cm = 1 m (মিটার)

Convert

1″ = 25.4 mm
1″ = 2.54 cm
39.37″ = 1 m
12″ = 1′ Fit
3′ = 1 Yard (গজ)
1 Yard = 36″
72 Fit = 1 bandil.

রডের হিসাব ও ওজন বাড়ী নির্মাণ
———————————————

1″ = 8 sut (সুত)
1/2″ = 4 sut (সুত)
1/4 = 2 sut (সুত)
1/8 = 1 sut (সুত)

৮ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.১২০ কেজি।
১০ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.১৮৮ কেজি।
১২ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.২৭০৬ কেজি।
১৬ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.৪৮১২ কেজি।
২০ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.৭৫১৮ কেজি।
২২ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন = ০.৯০৯৭ কেজি।
২৫ মিলি মিটার এক ফুট রডের ওজন =১.১৭৪৭ কেজি।

খোয়ার হিসাব
——————————————————-

* ১ টি ইটে = ০.৯ cft খোয়া হয়।
* ১০০ টি ইটে = ৯ cft খোয়া হয়।
* ১০০০ টি ইটে = ৯০ cft খোয়া হয়।

বালির হিসাব বাড়ী নির্মাণ
——————————————————-

* ১০০ sft ৫” গাথুনীতে ১:৫ অনুপাতে সিমেন্ট লাগে ২ ব্যাগ।
* ১০০ sft ১০” গাথুনীতে ১:৫ অনুপাতে সিমেন্ট লাগে ৪ ব্যাগ। বালু লাগে ২৪ cft।

ঢ়ালাই এর হিসাব

* ১০০ cft ঢ়ালাই এ ১:২:৪ অনুপাতে সিমেন্ট ১৭ ব্যাগ, বালু ৪৩ cft, খোয়া ৮৬ cft লাগে।
* ১ cft ঢ়ালাই এ ১:২:৪ অনুপাতে সিমেন্ট ০.১৭, বালু ০.৪৩ cft, খোয়া ০.৮৬ cft লাগে।

 

——————————————————————–

কোন কাজ কখন শুরু হবে তা নির্ধারণের জন্য আসলে একটি নির্মানক্রমের প্রয়োজন হয়। এই নির্মানক্রম কে ইংরেজিতে প্রকৌশলীরা ‘কনস্ট্রাকশন সিকোয়েন্স’ বলে থাকেন। বাড়ি তৈরীর নির্মানক্রম কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

১) কাঠামোগত বা স্ট্রাকচারাল কাজ।
২) সৌন্দর্য বর্ধণ বা ফিনিশিং কাজ।

আরও পড়ুন >> বাংলা ব্যাকরণের ১০০টি সন্ধি বিচ্ছেদ

এই দুই অংশ কে কয়েকটি ধাপে বা পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে:-

ক) কাঠামোগত বা স্ট্রাকচারাল কাজ:-

———————————————

১- সরঞ্জাম সন্নিবেশ বা সাইট মোবিলাইজেশন।
২- ভূমি জরিপ ও ভূগর্ভস্থ মাটি পরীক্ষা।
৩- আর্কিটেকচারাল, স্ট্রাকচারাল, প্লাম্বিং এবং ইলেকট্রিক্যাল নকশা চুড়ান্ত করা।
৪- ভবনের লে-আউট ও লেভেল দেয়া।
৫- পাইলিং করা (যদি প্রয়োজন হয়) ও মাটি কাটা।
৬- ফাউন্ডেশনের নিচে ব্লাইন্ড বা লীন কংক্রীট ঢালাই ও ইটের সোলিং করা।
৭- ফাউন্ডেশন ঢালাই।
৮- কলাম ঢালাই।
৯- বীম ও ছাদ ঢালাই।
১০- মেঝেতে ইটের লে-আউট দেয়া।
১১- ইটের গাঁথুনী করা।

খ) সৌন্দর্য বর্ধণ বা ফিনিশিং কাজ:-

——————————————–

১- দরজার চৌকাঠ লাগানো।
২- জানালার গ্রীল লাগানো।
৩- বাথরূম ও কিচেন সহ ছাদের বাগানের স্যানিটারী ও প্লাম্বিং এর সব ধরণের পাইপ ফিটিং করা।
৪- বৈদ্যুতিক সুইচবোর্ডের দেওয়ালের ভিতরের অংশ লাগানো।
৫- ভিতরের প্লাষ্টার করা।
৬- বাইরের দিকের প্লাষ্টার করা।
৭- কিচেন ও বাথরূমের বেসিন বা সিঙ্কের স্ল্যাব ঢালাই ও কনসিল অংশ লাগানো।
৮- থাই-এলুমিনিয়াম জানালা বা দরজা লাগানো (গ্লাস সহ)।
৯- বাথরূম ও কিচেনের দেওয়ালের টাইলস লাগানো।
১০- সিলিং রং এর ১ম কোট দেয়া (সিলার বা পুটি সহ)।
১১- ঘরের ভিতরে বা বাইরে মেঝেতে ও সিড়িতে বা লিফটের দেওয়ালে টাইলস বা মার্বেল লাগানো।
১২- বৈদ্যুতিক তার টানা।
১৩- বাইরের ও ভিতরের দেওয়ালের রং এর ১ম কোট দেয়া।
১৪- দরজার পাল্লা ফিটিং করা।
১৫- বাথরূম ও কিচেনের ফিটিংস লাগানো।
১৬- বৈদ্যুতিক সুইচ বা সকেট লাগানো।
১৭- টাইলসের পয়েন্টিং করা।
১৮- ছাদের উপরের বাগানে মাটি ভরা ও সুইমিং পুলের টাইলস লাগনো।
১৯- বেজমেন্ট বা ছাদের উপর পেটেন স্টোন করা।
২০- কাঠের বার্নিশ ও দেওয়ালের চুড়ান্ত রং করা।

Google Newsবিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন

 

————————————————————————

কোয়ালিটি বা গুনগত মান:: বাড়ী নির্মাণ

.———————————————————————–

ক) কনস্ট্রাক্শন এর পুর্বে :
• সয়েল টেষ্ট বা মাটি পরিক্ষা: ভাল জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা মাটি পরিক্ষা করাতে হবে। কেননা এই পরিক্ষার উপর ভিত্তি করেই ইঞ্জিনিয়ার পরবর্তিতে ডিজাইন করবেন।
• পানি টেষ্ট: কনস্ট্রাকশন কাজে যেই পানি ব্যবহার করা হবে তা অবশ্যই পরিক্ষা করে নিতে হবে। কেননা পানির গুনাগুনের উপর কংক্রিট এর গুনাগুন নির্ভরশীল।
• পোকা-মাকড়: শুরুতেই যদি পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রন না করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।

খ) আর সি সি :

• ডিজান ইঞ্জিনিয়ার প্রতিটি কাজের ধাপ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করবেন এবং স্বাক্ষর দিবেন।
• কংক্রিট এর সুষম মিশ্রন হতে হবে।
• কংক্রিট ল্যব টেষ্ট করতে হবে নিয়মিত (সিলিন্ডার টেষ্ট)।
• আর সি সি কাজে অবশ্যই ভাইব্রেটর ব্যবহার করতে হবে এবং এই ব্যবহার হতে হবে সঠিক।
• সাটারিং অবশ্যই সময়ের আগে খোলা যাবে না।
• কংক্রিট এর কিউরিং সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে করতে হবে।

গ) ব্রিক ওয়ার্ক ও প্লাস্টার

• শুকনা ইট ব্যবহার করা যাবে না। ভেজা ইট ব্যবহার করতে হবে।
• ১.২ মিটার এর বেশি উচ্চতায় একদিনে ইটের দেয়াল করা উচিৎ নয়।
• ৫ ইঞ্চি দেয়াল এর ক্ষেত্র প্রতি ৩.৫ ফুট পর পর ৬ মিলি রড দেওয়া ভাল। এতে ক্র্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
• জানালাতে সিল লেভেলে লিন্টেল ব্যবহার করা ভাল।
• বিম এবং দেয়াল এর জয়েন্টে মর্টার সাথে ধাতু মিশ্রিত পানি প্রতিরোধক কেমিক্যাল ব্যবহার করা উচিৎ।
• পাইপ এর উপর প্লাস্টার করার সময় চিকেন মেশ বা তার জালি ব্যবহার করতে হবে।.

ঘ) প্লাম্বিং

• এমন উপাদান ব্যবহার করতে হবে যা সহজে ক্ষয় বা ছিদ্র হয় না।
• প্রতিটি পাইপ এর প্রেসার বা চাপ শক্তি অবশ্যই পরিক্ষা করে নিতে হবে।
• পানি প্রতিরোধী হতে হবে। অর্থাৎ পানি যেন চুইয়ে বাইরে না আসে সেদিকে খেয়ার রাখতে হবে।
• বাথরুম বা গোসলখানা বা পায়খানাতে প্রয়োজনীয় স্লোপ বা ঢাল থাকতে হবে।

ঙ) ইলেকট্রিক বাড়ী নির্মাণ

• ব্র্যান্ড ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে।
• সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে দুর্ঘটনা না হয়।
• আর্থিং করতে হবে।
• লাইটেনিং এরেস্টার বা বজ্রপাত প্রতিরোধক ব্যবহার করতে হবে।

চ) কর্মদক্ষতা

• দক্ষ কর্মি নিতে হবে।
• সময় মত তদারকি করতে হবে

ছ) ভাল মানের মালামাল

• ব্র্যান্ড মালামাল ব্যবহার করতে হবে
• সব মালামাল গ্রহনের পুর্বে ভালভাবে পরিক্ষা করে নিতে হবে।

Rakibul Islam

Check Also

uTorrent

uTorrent সেরা ভিডিও ডাইনলোড সফটওয়্যার

Spread the loveuTorrent হল একটি অগ্রগণ্য BitTorrent ক্লায়েন্ট যা সারা বিশ্বে সঙ্গীত, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *