শোয়া এবং ঘুমের সুন্নাত ও বিধি-নিষেধ সমূহ আমাদের সকলের মেয়ে চলা উচিত। দুনিয়া ও আখিরাতে তোমার সুফল বয়ে আনতে পারে। বেশি বেশি করে আল্লাহ ও নবী রাসুলের কথা মেনে চলি। জীবন সুন্দর হবে।
১. ইশার নামাযের পর গল্প-গুজব বা দুনিয়াবী কাজ-কর্ম কিম্বা দুনিয়াবী
কথা-বার্তায় লিপ্ত না হয়ে যথাশীঘ্র সম্ভব ঘুমানাের প্রস্তুতি নেয়া সুন্নাত। এ সুন্নাত পালন করলে শেষ রাতে তাহাজ্জুদের জন্য ওঠা সহজ হয় কিম্বা অন্ততঃ ফজরের নামাযের জন্য সহজেই ঘুম ভাঙ্গে। ইশার পর ঘুমানাের পূর্বে অপ্রয়ােজনীয় দুনিয়াবী কথা-বার্তা বলা মাকরূহ।
২. ঘুম পড়ার পূর্বে পেশাব-পায়খানার জরুরত থেকে ফারেগ হয়ে নেয়া উত্তম।
৩. ঘুমানাের পূর্বে চেরাগ/বাতি ও আগুন নিভিয়ে দেয়া সুন্নাত। বিশেষ প্রয়ােজন
হলে ডিম লাইটও জ্বালিয়ে ঘুমানাে ঠিক নয়।
৪. ঘুমানাের পূর্বে খাদ্য-খাবার ও পানির পাত্র ঢেকে দেয়া সুন্নাত। ঢাকার জন্য
কোন পাত্র না পেলে অন্ততঃ একটা লাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখবে।
৫. মেসওয়াক করে ঘুমানাে সুন্নাত।
৬. উযূ অবস্থায় ঘুমানাে সুন্নাত।
৭. উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগানো সুন্নাত ।
৮. পূর্বে থেকেই বিছানাে রয়েছে (যাতে ধুলা-বালি থাকার সম্ভাবনা) এমন বিছানা হলে তিনবার সে বিছানা ঝেড়ে নেয়া সুন্নাত।
৯. শােয়ার আগে কাপড় পাল্টানাে সুন্নাত।
১০. খুব বেশী নরম বিছানায় না ঘুমানাে উত্তম।
১১. দরজার চৌকাঠের উপর কিম্বা যে ছাদে রেলিং বা ঘেরা নেই তাতে শােয়া নিষেধ।
১২. সূরা- আলিফ লাম মীম সাজদা (২১ পারা) তিলাওয়াত করা সুন্নাত ।
১৩. সূরা-মুলক তিলাওয়াত করা সুন্নাত !
১৪. আয়াতুল কুরছী পাঠ করা সুন্নাত (শোয়া এবং ঘুমের সুন্নাত)।
১৫. সূরা-বাকারার শেষ তিন আয়াত (থেকে শেষ পর্যন্ত) পাঠ করা সুন্নাত।
১৬. তাসবীহে ফাতেমী অর্থাৎ, ৩৩ বার সােবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বা ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া সুন্নাত ।
১৭. কালেমায়ে তইয়্যেবা পড়া সুন্নাত ।
১৮. দুরূদ শরীফ পড়া সুন্নাত।
১৯. তিনকুল (সূরা-এখলাস, ফালাক ও নাছ) পড়ে হাতে ফুক দিয়ে সমস্ত শরীরে বুলানাে। এভাবে তিনবার করা সুন্নাত।
২০. সূরা-কাফিরূন পড়া সুন্নাত। (আবু দাউদ, তিরমিযী)
আরও পড়ুন >> লঞ্চ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বাংলা রচনা – প্রবন্ধ
আরও পড়ুন >> Xiaomi 12 Pro কি কি থাকছে এবং দাম কত?
২১. তিনবার এস্তেগফার পড়া এবং গােনাহ থেকে তওবা করা ।
২২. ঘুমানাের পূর্বে এছীয়তের প্রয়ােজন থাকলে তা করা।
২৩. মুর্দার মাথা কবরে যে দিকে রাখা হয় সে দিকে মাথা রেখে শােয়া (যেমন | আমাদের দেশের জন্য উত্তর দিকে মাথা দিয়ে শােয়া) সুন্নাত।
২৪. প্রথমে অন্ততঃ কিছুক্ষণ ডান হাত ডান গালের নীচে রেখে ডান কাতে শােয়া | সুন্নাত।
২৫. ডান হাত গালের নীচে রেখে এই দুআ পড়বে
اللهم قني عذابك يوم تبعث عبادك .
অর্থঃ হে আল্লাহ, যেদিন তােমার বান্দাদেরকে তুমি পুনরুত্থিত করবে, সেদিন তােমার আযাব থেকে আমাকে রক্ষা কর ।
২৬. এক পা খাড়া করে তার উপর অপর পা রেখে চিত হয়ে এমন ভাবে শয়ন করবে না, যাতে সতর খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সতর না খুললে ক্ষতি নেই।
২৭. যিকির করতে করতে ঘুমানাে উত্তম।
২৮. শােয়ার পর ঘুম না আসলে পড়বে
اعوذ بكلمات الله التامة من غضبه وعقابه وشر عباده وم همزاني الشياطين وأن يحشروني .
অর্থ : আল্লাহর সমস্ত কালামের ওছীলা দিয়ে আমি তার ক্রোধ, তার শাস্তি, তাঁর বান্দাদের অনিষ্টকারিতা, শয়তানদের উস্কানী এবং আমার কাছে তাদের হাজির হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
২৯. ঘুম থেকে উঠে হস্তদ্বয় দ্বারা মুখমণ্ডল ও চক্ষুদ্বয় হালকাভাবে মর্দন করবে, যাতে ঘুমের প্রভাব কেটে যায়।
৩০. ঘুম থেকে উঠে তিনবার আলহামদু লিল্লাহ বলা সুন্নাত।
৩১. ঘুম থেকে উঠে তিনবার কালেমায়ে তইয়্যেবা পড়া সুন্নাত।
৩২. ঘুম থেকে উঠে এই দুআ পড়া সুন্নাত – শোয়া এবং ঘুমের সুন্নাত
الحمد لله الذي أحيانا بعد ما أماتنا وإليه النشور .
অর্থ ও সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে মৃত্যু দানের পর আবার জীবিত (অর্থাৎ, জাগ্রত করেছেন এবং তাঁর কাছেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।
৩৩. ঘুম থেকে উঠে মেসওয়াক করা সুন্নাত।
৩৪. ঘুম থেকে উঠে উষ্য করা উত্তম।
৩৫. এশার নামাযের পূর্বে ঘুমানাে নিষেধ। তবে একান্ত অসুবিধা বশতঃ ঘুমাতে হলে এশার নামাযের জন্য জাগ্রত করার লােক নির্ধারিত করে নিয়ে ঘুমানাে যেতে পারে।
৩৬, আসরের পরও ঘুমাবে না। (শোয়া এবং ঘুমের সুন্নাত)
৩৭. সুযােগ হলে দুপুরে খাওয়ার পর কায়ল্লাহ করা অর্থাৎ, কিছুক্ষণ শুয়ে থাকা সুন্নাত, ঘুম আসুক বা না আসুক। ৩৮. এক কাপড়ের (এক কাথা বা এক লেপের নীচে দুইজন পুরুষ বা দুইজন মেয়ে লোক শোয়া বড়ই লজ্জার কথা) এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন।