নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে মৌসুম শেষেও ১১১ নিয়োগ

Spread the love

নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে বিভিন্ন পদে ১১১ জন শ্রমিক-কর্মচারীর নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন। সেই সাথে চার কার্যদিবসের মধ্যে সকল নিয়োগ বাতিল করে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্পোরেশনকে অবহিত করতে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে নির্দেশনা দিয়া হয়েছে।

গত ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চীফ অব পার্সোনাল মোঃ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রটি চিনিকল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এসব নিয়োগের অধিকাংশই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সুপারিশে হয়েছে। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে প্রতিটি পদের বিপরীতে ২ থেকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে চিনিকল প্রশাসন এসব নিয়োগ কার্যকর করে। তবে কর্পোরেশনের চিঠিতে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ না থাকলেও শুধু অপ্রয়োজনীয় শ্রমিক নিয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘নর্থবেঙ্গল চিনিকলে নিকট অতীতে ‘কাজ নাই মজুরী নাই’, ‘দৈনিক হাজিরা’ এবং অনান্য পদে অনিয়মিতভাবে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী ও শ্রমিক বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, একটি লোকসান প্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া এবং মাড়াই মৌসুম শেষ হওয়ার পরও অস্থায়ী শ্রমিকদের বহাল রাখা অবিবেচনাপ্রসূত ও অগ্রহণযোগ্য।’

নর্থ বেঙ্গল চিনিকল প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, দেশের বিদ্যমান চিনিকলগুলো লোকসানে থাকার কারনে ২০১৫ সালে কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত দেয় ২০০২ এর বিধি মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ না দিয়ে বিদ্যমান শ্রমিকদের দ্বারাই মিলের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য। ২০১৯ সালে কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করে নতুন নির্দেশনা দেয়, ২০০২ এর বিধি মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে। এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত মৌসুমে চিনিকলে ২৭০টি পদের সৃষ্টি হয় যার ১১১টি পদে নিয়োগ কার্যকর করে চিনিকল প্রশাসন। বর্তমানে চিনিকলটিতে বিভিন্ন পদে ৯ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে।

ইসলাম >> দান করার সওয়াব বেশি না কি ঋণ দেয়ার সওয়াব বেশি?

চিনিকলের বিদ্যমান শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবী, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিলো। পদপ্রতি লাখ টাকার উপরে নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি, চিনিকলের লোকসান এবং সুপারিশকারীদের মধ্যে পদের সংখ্যা ভাগাভাগি নিয়ে প্রকাশে ও অপ্রকাশ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, কর্পোরেশন ও মন্ত্রণালয়ে মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। বিদ্যমান শ্রমিকরা দিনপ্রতি ২৬০ টাকা থেকে ৫৩৬টাকা হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করেন। কিন্তু আর্থিক সংকটে থাকায় গত তিন মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারেনি চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

একাধিক শ্রমিক জানান, তারা নিজেরাই বেতন পান না। যেসব নতুন শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাতে বিদ্যমান শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধই অনিশ্চিত। নতুনদের স্বল্প সময়ের জন্য নিয়োগ দিলেও তারাই আগে পাওনা বুঝে পাবে। এতে আমরা বঞ্চিতই থেকে যেতাম। শ্রমিকদের স্বার্থের অনুকূলে নিয়োগ বাতিল করায় কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার অধীনে নিয়োগে কোনো বাণিজ্য হয়নি। মিলের অর্থ সাশ্রয়ে ২৭০ পদের বিপরীতে ১১১ জনের নিয়োগ দিয়েছি। শর্তানুযায়ী, নিয়োগকৃতদের মজুরী ৫৩৬ টাকার পরিবর্তে ২৬০ টাকা মজুরী প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এতে মিলের ১৯ লাখ টাকা সাশ্রয় হতো। যাদের সুপারিশ রাখিনি, তারা অসত্য তথ্য দিয়ে সম্মানহানি করেছে। কর্পোরেশনকে নিয়োগের ব্যাখ্যা দিয়েছি। আশা করি বাতিল সিদ্ধান্তটি পুনঃবিবেচনা হবে।’

//zohabd.com/নাটোর

আরও পড়ুন >> ট্রাস্ট ব্যাংক বাড়ী নির্মানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে সহজেই

Check Also

কুমিল্লায়

কুমিল্লায় 4তলা ছাদ থেকে ফেলে দারোয়ানকে হত্যা

Spread the loveকুমিল্লায়, চান্দিনা – কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ রোডে অবস্থিত একটি ভবনের ছাদে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *