স্বামীর পরকিয়ায় বাঁধা দেওয়ায় চাঁদ সুলতানা রাণী (৩৬) নামে এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌরসভার মৌখাড়া এলাকার ঘটে। রাণী উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার মৌখাড়া এলাকার রবিউল করিমের স্ত্রী এবং লালপুর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল মোমিন মন্ডলের মেয়ে।
শুক্রবার রানীর মৃত্যু হয় শনিবার (০৪ এপ্রিল) নিহত চাঁদ সুলতানা রাণী (৩৬) এর ময়নাতদন্ত শেয়ে লালপুর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামে লাশ দাফন করা হয়।
এসময় নিহতের পরিবারে সদস্যরা বলেন, রানীর শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে বৃহস্পতিবার রাতভর শারীরিক নির্যাতন করে তার স্বামী রবিউল। রাণীর মৃত্যুর পর থেকে স্বামী রবিউল মোবাইল ফোন বন্ধ করে পলাতক রয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
আরও পড়ুন >> ট্রাস্ট ব্যাংক বাড়ী নির্মানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে সহজেই
নিহতে ভাই সুইট (০১৭৫৫-৭৪৬৫০১) বলেন, প্রায় ১৭ বছর আগে পারিবারিক ভাবে রবিউল করিমের সঙ্গে রাণীর বিয়ে । তখন একটি এনজিওতে চাকুরী করতেন রবিউল করিম। সেখানে এক সহকর্মীর সাথে পরকিয়ায় জড়ানোর ফলে চাকুরী হারায়। পরে আকিজ কো-অপারেটিভ ব্যাংক, বনপাড়া, নাটোর শাখায় পুনরায় চাকরী হয়। এখানেও চাকুরী কালে পুনরায় স্থানীয় এক মেয়ের সাথে পরকিয়ায় জড়ায় রবিউল। এর প্রতিবাদ করলেই বোনের উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন করিম। ইতিমধ্যে বোনের ঘরে এক ছেলে (১৪) ও এক মেয়ে (৭) জন্ম হয়। বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছিলেন রাণী। তবু অকারনেই নির্যাতন করতেন।
এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতভর শারীরিক নির্যাতন করে ঘরের খাটের সাথে বেঁধে রাখে রাণীকে। সকালে খবর পেয়ে তিনি (সুইট) ও বড়ভাই আলতাব হোসেন গিয়ে বোন-রবিউলকে বুঝিয়ে মিল করে দিয়ে বাড়ি ফিরে যাই। বাড়ি ফেরা মাত্র মোবাইল ফোনে রবিউল জানায়, রাণী গলায় দড়ি দিয়ে আতœহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে সুইট আরও বলেন, মুলতঃ আমরা ফিরে আসার পর তাকে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ, বোন এতো নির্যাতন সহ্য করেছে কোনদিন আত্মহত্যার কথা মুখেও আনেনি। আবার ঘটনার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
নিহতের বড়ভাই আলতাব হোসেন বলেন, বোনের মুখে তাকে নির্যাতনের অনেক কথা শুনেছি।তবু বাচ্চদের কথা ভেবে এখানেই থেকে গেছে। অবশেষে তাকে যে রবিউল মেরে ফেলবে এটা ভাবতে পারিনি। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের জন্য থানায় মামলা করাসহ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবো।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের বড়ভাই লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।