স্বপ্নে জান্নাত দেখলে
স্বপ্নে জান্নাত এ প্রবেশ করেছে মর্মে কেউ স্বপ্ন দেখল। এটা তার কৃত সৎকর্ম ও নেক আমলের সুসংবাদ। যার ইঙ্গিতে বুঝা যায় অবশ্যই সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কেউ যদি দেখতে পায় সে জান্নাতের ফল খেয়েছে অথবা কেউ তাকে জান্নাতের ফল দিয়েছে, তাহলে জান্নাতী ফলের অর্থ মধুর বচন, সুমিষ্ট কথা। ((স্বপ্নে জান্নাত))
যেহেতু সত্য, ন্যায় ও উত্তম কথা আলোচ্য ফলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থ বহন করে। কিন্তু যদি দেখে জান্নাতী ফল লাভ তো করেছে, অথচ তা থেকে সে কিছুই খায়নি অথবা খেতে সক্ষম হয়নি, তাহলে ব্যাখ্যা হবে-তার দ্বীনী বিষয়ে কল্যাণ নিহিত আছে সত্য, কিন্তু এ দ্বারা তার ব্যক্তিগত কোন উপকার সাধিত হবে না। কোন কোন সময় এ দ্বারা ইলম ও হিকমত অর্জনের ব্যাখ্যা দেয়া হয়, যা দ্বারা তার পক্ষে উপকার লাভ করা সম্ভব হবে না।
কেউ স্বপ্ন দেখল, স্বপ্নে জান্নাত – সে জান্নাতী ঝর্ণাধারা থেকে পানি পান করেছে অথবা জান্নাতী পোশাক পরিধান করেছে। এমতাবস্থায় ব্যাখ্যা হবে-দুনিয়া ও আখেরাতে সে আশানুরূপ কল্যাণ হাসিল করতে সমর্থ হবে। অধিকন্তু তাকওয়া-পরহেযগারীর পুরস্কারস্বরূপ তার উদ্দেশ্য পূরণ হবে। আর যদি জান্নাতের সুশোভিত বাগ-বাগিচা, প্রবহমান ঝর্ণাধারা এবং হূর-বালা দেখতে পায়, তাহলে ব্যাখ্যা হবে-ইহকাল ও পরকালে সে কল্যাণ, তাকওয়া-পরহেযগারী এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবে। অধিকন্তু তার স্বপ্ন দেখা অনুগ্রহের সমপরিমাণ পার্থিব নেয়ামত হাসিল করা তার জন্য সহজসাধ্য হবে।
স্বপ্নে জাহান্নাম দেখলে
কেউ স্বপ্নে দেখল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। এর অর্থ- সে মারাত্মক অপরাধ ও বড় বড় গুনাহের কাজে লিপ্ত হবে। এটা মূলত বেহেশত দেখতে পাওয়ার বিপরীত অর্থবোধক। বস্তুত স্বপ্নযোগে জাহান্নাম দেখতে পাওয়া ধ্বংস ও বিপর্যয়ের নিদর্শন। কাজেই জাহান্নাম দর্শনকারী ব্যক্তির অতিশীঘ্র তওবা-ইস্তিগফারে আত্মনিয়োগ করা এবং আত্মশুদ্ধি ও সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত। যদি দেখে জাহান্নামে ঢুকেছে বটে, কিন্তু তাতে তার কোন কষ্ট-যাতনা অনুভব হয়নি, এর ব্যাখ্যা হবে- যে পরিমাণ জাহান্নাম সে দেখতে পেয়েছে, তার সমপরিমাণ পার্থিব দুঃখ-কষ্টের সে শিকার হবে। ((স্বপ্নে জান্নাত))
বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন
স্বপ্নে কিয়ামত হতে দখলে
কেউ স্বপ্নে দেখল কিয়ামত অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। এর ব্যাখ্যা যে স্থানে কিয়ামত কায়েম হয়েছে মর্মে সে দেখতে পেয়েছে, ব্যাপকহারে সেখানে ন্যায়-নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং সে অঞ্চলের বাসিন্দারা অত্যাচারী যালিম হলে আল্লাহ্ তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন এবং তাদের যথাযোগ্য শাস্তির বিধান করবেন। কেননা, কিয়ামতের দিন মূলত ও কার্যত মীমাংসা, ন্যায়-ইনসাফের বাস্তব অনুশীলন এবং প্রতিকার-প্রতিশোধ গ্রহণেরই নির্ধারিত অনুষ্ঠান।
পক্ষান্তরে স্থানীয় বাসিন্দারা মযলুম ও নির্যাতিত জনগোষ্ঠী হলে তাদের প্রতি আল্লাহ্ সাহায্য নেমে আসবে। স্বপ্নযোগে কোন ব্যক্তি মহান আল্লাহ্ সামনে নিজেকে দন্ডায়মান দেখতে পেলে তার ব্যাপার বড় কঠোর ও কঠিন ধরে নিতে হবে। বস্তুত এস্বপ্ন সত্য-সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা একশ’ ভাগ। কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে যে লোক কোন কিছু দেখতে পায়, তার অবস্থাও ঠিক একই ধরনের হবে।
স্বপ্নে পার্থিব আগুন দখলে
স্বপ্নযোগে পার্থিব আগুন দেখতে পাওয়ার ব্যাখ্যা কয়েক প্রকারে দেয়া হয়। যেমন কেউ দেখল-অনুর্বর বিরান ভূমির কোন শহর, জনপদ কিংবা বাড়ীঘরে আগুন লেগেছে। আগুনের লেলিহান শিখা যেখানে পতিত হয়, তাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলে, তদুপরি তার বিকট আওয়াজ ও ভয়াবহ গর্জনও শুনতে পাওয়া যায়। এর ব্যাখ্যা হবে-যে পরিমাণ জায়গা অগ্নিশিখা বেষ্টন করে নিবে, সেখানটা যুলুম-নির্যাতনের তান্ডব গ্রাস করে নিবে। কিন্তু জায়গাটা বিরানভূমি না হয়ে যদি উর্বর হয়, তাহলে সে অঞ্চলে মহামারী আকারে প্লেগ, বসন্ত, বক্ষব্যাধি ইত্যাদি রোগের কারণে মানুষের মৃত্যু হবে। আর আগুনে যদি ব্যাপ্তি ও শিখার প্রচণ্ডতা না থাকে, গর্জন শুনা না যায়, আবার কিছু দগ্ধ করে আর কিছু দগ্ধ না করে অক্ষত ছেড়ে দেয়, তাহলে এটা দ্বারা সেখানে রোগব্যাধি ও সংকট-দুর্ঘটনা দেখা দেয়ার পদধ্বনি বুঝতে হবে।
স্বপ্নে যদি দেখা যায়- আকাশ থেকে অগ্নিশিখা নেমে এসেছে, কিন্তু কোন কিছু দগ্ধ করতে দেখা যায়নি, তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ এবং কঠিন সমস্যার ইঙ্গিতবাহী। বাকবিতন্ডা তীব্র আকার ধারণ করবে, বাকযুদ্ধ প্রচন্ড হবে। অবশ্য তাতে কোন ক্ষতি হওয়ার আশংকা নেই। কিন্তু আগুনের মধ্যে যদি ধোঁয়া আছে বলে মনে হয়, তবে এটা সমস্যা সহজ ও শীতল হওয়ার অর্থবোধক।
আরও পড়ুন>> কৃষি সেবা পোর্টাল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে 45 সেবা
আর যদি যমীন থেকে অগ্নিশিখা আকাশপানে উঠে যেতে দেখা যায়, তাহলে এর ব্যাখ্যা হবে- উক্ত স্থানের বাসিন্দারা আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অভিযোগ দাঁড় করিয়ে, জঘন্য অপবাদ দিয়ে নোংরা পাপাচারে লিপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর সাথে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। স্বপ্নে কেউ যদি আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পায় এবং সে ব্যক্তি নিজে কিংবা অন্য কোন লোক তাতে হাত-পা তাপিয়ে নিচ্ছে, তবে এর অর্থ হবে- দর্শনকারী এমন ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, যা দ্বারা তার উপকার হবে এবং তার অভাব-অনটন দূর হবে। কেননা, শীতলতা দারিদ্র্যের লক্ষণ আর উষ্ণতা গনীমতের মাল পাওয়ার ইঙ্গিতবাহী। ((স্বপ্নে জান্নাত))
ভিডিও : আমি রাজনীতি করতে আসি নাই ।। মাওলানা তৈয়বুর রহমান