যৌবনকালের ইবাদত আল্লাহ বেশি পছন্দ হওয়ার কারণ

Spread the love

যৌবনকালের ইবাদত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হাশরের ময়দানে মানুষকে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে, তার মধ্যে একটি হলো- ‘যৌবনকাল কিভাবে কাটিয়েছে?’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় যৌবনকাল। যৌবনকালের ইবাদত আল্লাহর কাছে অনেক দামি।

যৌবনকালের ইবাদত আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ নিয়ামত, যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জীবনের মাঝামাঝি সময়ে দিয়ে থাকেন। কারণ মানুষ যখন ভূমিষ্ঠ হয়, তখন সে দুর্বল থাকে। কথা বলতে পারে না, নিজ হাতে খেতে পারে না। সব কাজেই তাকে মা-বাবা কিংবা অন্য কারো সহযোগিতা নিতে হয়। আবার বৃদ্ধকালেও মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন আবার মানুষ পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

Google News বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন

মাঝামাঝি সময়েই মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে থাকেন, যা ব্যবহার করে তারা বিশ্ব জয় করতে পারে। এটা সবশক্তিমান আল্লাহর রীতি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন দুর্বল বস্তু থেকে এবং দুর্বলতার পর তিনি শক্তি দান করেন। আর শক্তির পর তিনি আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা: রোম, আয়াত: ৫৪)

যৌবনকালের ইবাদত এর গুরুত্ব সম্পর্কে রয়েছে অনেক মূল্যবান কথা ও উপদেশ। বিজ্ঞজনরা বলেন থাকেন-
‘পাকা দাড়ির বুড়ো লোকের ফরজ, নফল, তাহাজ্জুদ নামাজে যে সওয়াব রয়েছে, একজন যুবক শুধু ফরজ নামাজ পড়লে তার চেয়ে বেশি সওয়াব পাবে।’

সে কারণেই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুবকদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন- ‘একজন বৃদ্ধের ইবাদতের চেয়ে আল্লাহ তাআলা সেসব যুবকের ইবাদতে বেশি খুশি হন; যারা যৌবন বয়সে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকে।’

যৌবন মানেই বন্ধু, আড্ডা, গান, মাস্তি নয়। মহান আল্লাহ ক্ষণিকের জন্য মানুষকে তাঁর এই বিশেষ নিয়ামত দিয়ে পরীক্ষা করেন। যারা তাতে উত্তীর্ণ হবে, তারাই সফল। আর যারা তা অবহেলা করবে, তারা চির ব্যর্থ। যে ব্যক্তি তার যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করবে, কঠিন কিয়ামতের দিন সে মহান আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় পাবে।

আরও পড়ুন>> কৃষি সেবা পোর্টাল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে 45 সেবা

পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যেদিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। (যৌবনকালের ইবাদত) সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে। (বুখারি, হাদিস: ৬৬০)

যৌবনকালের ইবাদত

যুগে যুগে সব পাপ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুবকরাই দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি জাতির ইতিহাসেই দেখা যায়, তাদের মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুবকরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তেমনই এক যুবক ছিলেন ইবরাহিম (আ.)। যিনি সর্বপ্রথম তাঁর গোত্রের মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের কেউ কেউ বলল, আমরা শুনেছি এক যুবক এই মূর্তিগুলোর সমালোচনা করে। তাকে বলা হয় ইবরাহিম।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত: ৬০)

মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপযুক্ত সময়ে বিশেষ বিশেষ নিয়ামত দান করেন। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জন্য সেই উপযুক্ত সময় হলো যৌবন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মুসা যখন যৌবনে পদার্পণ করল এবং পরিণত বয়স্ক হলো, তখন আমি তাকে বিচারবুদ্ধি ও জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।’(সুরা: কাসাস, আয়াত: ১৪)

হজরত ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগ পর্যন্ত আদম সন্তানের পা দুটি আল্লাহর কাছ থেকে সরতে পারবে না।

আরও পড়ুন >> গর্ভবর্তী নারীদের খাবার 10টি টিপস Positive affect of Food

তাহলো (যৌবনকালের ইবাদত)-
১। তার জীবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে?
২। তার যৌবনকাল কি কাজে বিনাশ করেছে?
৩। তার ধন-সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে?
৪। তা কি কি খাতে খরচ করেছে।
৫। সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল আর সে অনুযায়ী কি কি আমল করেছে?

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *