বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের জন্য বিদেশে পড়তে যেতে চাই এমন শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২৫ সালে অন্তবর্তী সরকারের সময়ে কয়েকটি বড় “সিস্টেম” ও সুবিধা চালু/আপডেট হয়েছে। বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের জন্য নিচে স্পষ্ট পয়েন্টে সব দিলাম—কি সুবিধা, কবে থেকে, কী লাগবে, কেমন খরচ, ইত্যাদি।
1) নতুন/আপডেটেড সরকারি সিস্টেম ও সুবিধা
- e-Apostille (অনলাইন অ্যাপোস্টিল): বাংলাদেশ এখন Hague Apostille Convention–এ যোগ দেওয়ায় MoFA-এর e-Apostille প্ল্যাটফর্মে অনলাইনে ডকুমেন্ট অ্যাপোস্টিল করা যাচ্ছে—এতে আগের মত দূতাবাসে লিগ্যালাইজ করতে হয় না (যে দেশ অ্যাপোস্টিলে সাইনেটরি)। ফলে সময়, খরচ ও হয়রানি কমেছে।
- অনলাইন সনদ যাচাই (SSC/HSC/বিশ্ববিদ্যালয়): শিক্ষা মন্ত্রণালয়/UGC–র ব্যবস্থায় শিক্ষাবোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট অনলাইনে ভেরিফাই করা যাচ্ছে—বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়/দূতাবাসে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত হচ্ছে।
- “দূতাবাসে আলাদা অ্যাটেস্টেশন ছাড়াই” অনলাইন অ্যাটেস্টেশন কার্যকর: সরকার জানিয়েছে, MoFA-এর অনলাইন অ্যাটেস্টেশন হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে আর দূতাবাসে আলাদা অ্যাটেস্ট লাগবে না—এটি ৯ আগস্ট ২০২৫-এ সরকারি সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পুরোপুরি অনলাইন: বাংলাদেশ পুলিশের PCC (Police Clearance Certificate) এখন সম্পূর্ণ অনলাইনে আবেদন/ডেলিভারি–যোগ্য; বিদেশগামী পড়ুয়ারা ভিসা ফাইলে এই সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।
- স্টুডেন্ট ফাইল ও কার্ড চ্যানেল রেমিট্যান্স: টিউশন/লিভিং খরচ পাঠাতে ব্যাংকের Student File–এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ড চ্যানেল দিয়েও শিক্ষা-সংক্রান্ত পেমেন্ট পাঠানো যাচ্ছে (বিশেষত করেসপন্ডেন্স/অনলাইন কোর্সের জন্য)।
More : Samsung Galaxy A17 5G স্যামসাং মোবাইল Specification ও দাম
2) বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবে
- কম কাগজপত্র ও কম দৌড়ঝাঁপ: e-Apostille + অনলাইন ভেরিফিকেশন + অনলাইন PCC মিলিয়ে বহু কাজ এক প্ল্যাটফর্ম/অনলাইনেই হয়ে যাচ্ছে।
- দ্রুততা ও খরচ কমা: e-Apostille এবং অনলাইন অ্যাটেস্টেশনের ফলে দূতাবাস ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন কমে সময় ও ফি সেভ হবে।
- পেমেন্টের নমনীয়তা: ব্যাংকের স্টুডেন্ট ফাইল থেকে ইনস্টিটিউশন/নিজের বিদেশি অ্যাকাউন্টে লিভিং খরচ; কিছু ক্ষেত্রে কার্ড চ্যানেলেও টিউশন/ফি দেওয়া সম্ভব।
3) কখন থেকে কার্যকর
- e-Apostille চালু: ২০২৪-এর দ্বিতীয়ার্ধ থেকে যোগদান; ২০২৫-এ সরকারী e-Apostille পোর্টাল পূর্ণমাত্রায় চলমান।
- অনলাইন অ্যাটেস্টেশন স্বীকৃতি: সরকারিভাবে ৯ আগস্ট ২০২৫ থেকে “অনলাইন অ্যাটেস্ট হলেই দূতাবাসে না যেতে হতে পারে” নীতিটি ঘোষিত/চলমান।
- অনলাইন সনদ যাচাই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়/UGC ঘোষণামতে ২০২৪-এর শেষ দিক থেকে প্রক্রিয়া চালু, ২০২৫-এ পরিসর বেড়েছে।
4) কী কী ডকুমেন্ট লাগবে (সাধারণ চেকলিস্ট)
- পাসপোর্ট (ভ্যালিড), অ্যাডমিশন অফার/ I-20/ CAS/ COE, টিউশন ইনভয়েস/রিফান্ড পলিসি, শিক্ষাগত সনদ/ট্রান্সক্রিপ্ট (অনলাইন ভেরিফাই + e-Apostille যেখানে প্রযোজ্য),
- স্পনসরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট/আয়-প্রমাণ, স্টুডেন্ট ভিসা (যদি পাওয়া থাকে), ছবি,
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (PCC) – অধিকাংশ দেশে ভিসা ফাইলে প্রয়োজন, অনলাইনে করা যায়,
- স্টুডেন্ট ফাইল খোলার কাগজপত্র (ব্যাংকভেদে সামান্য পার্থক্য থাকে—উদাহরণ: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের তালিকা)।
5) শিক্ষাগত যোগ্যতা (দেশভেদে ভিন্ন, সাধারণ নির্দেশনা)
- UG/PG ভর্তি শর্ত: SSC/HSC বা সমমান, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রান্সক্রিপ্ট/ডিগ্রি;
- ভাষা-দক্ষতা: ইংরেজিভাষী দেশে সাধারণত IELTS/TOEFL;
- ফান্ডের প্রমাণ: টিউশন+লিভিং কভার এমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট/স্পনসরশিপ/স্কলারশিপ।
(এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়/দেশ অনুযায়ী বদলায়; উপরোক্ত অনলাইন অ্যাটেস্ট/ভেরিফিকেশন এগুলো জমা দেওয়া সহজ করেছে।)
বিস্তারিত জানতে Google News এর সঙ্গে থাকুন
6) খরচের ধারণা (বার্ষিক, দেশ/ইনস্টিটিউশন অনুসারে পরিবর্তনশীল)
- আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত টিউশন ২০–৩০ হাজার USD/বছর,
- লিভিং খরচ অনেক দেশে প্রায় টিউশনের কাছাকাছি, ফলে মোট ~৬০ হাজার USD/বছর ধরতে বলা হয় (দেশ/শহরভেদে কম-বেশি)।
- ব্যাংক ফি/চার্জ: স্টুডেন্ট ফাইল খোলা/রেমিট্যান্সে ব্যাংকভেদে কিছু ফি থাকে (উদাহরণ: বার্ষিক ফি/রেমিট্যান্স চার্জ—স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বর্তমান সূচি তাদের সাইটে রয়েছে)।
7) স্টুডেন্ট ফাইল/রেমিট্যান্স—কীভাবে কাজ করে
- কখন খুলবেন: অফার লেটার পেলেই স্টুডেন্ট ফাইল খোলা শুরু করতে বলেন ব্যাংকগুলো।
- কোথায় টাকা যায়: টিউশন সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে; লিভিং খরচ শিক্ষার্থীর বিদেশি অ্যাকাউন্টে পাঠানো যায়।
- নবায়ন: সাধারণত প্রতি বছর এনরোলমেন্ট/প্রোগ্রেস রিপোর্ট/ইনভয়েস দিয়ে নবায়ন করতে হয়।
- কার্ড চ্যানেল: বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু শিক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়েও পেমেন্ট করা সম্ভব।
দ্রুত প্রস্তুতির টু-ডু চেকলিস্ট
- পাসপোর্ট আপডেট করুন → 2) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার/I-20/CAS/COE সংগ্রহ →
- অনলাইন সনদ যাচাই (SSC/HSC/UGC) + প্রয়োজন হলে e-Apostille করুন →
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (অনলাইন) → 5) ব্যাংকে গিয়ে স্টুডেন্ট ফাইল খুলুন →
- টিউশন/লিভিং রেমিটেন্স প্ল্যান (ফাইল/কার্ড চ্যানেল) সেট করুন →
- দেশ/বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী ভিসা ডকস জমা দিন।
-
নোট/সতর্কতা
- e-Apostille কেবল সেইসব দেশে প্রযোজ্য যারা Hague Convention-এ সাইনেটরি; নইলে আলাদা লিগ্যালাইজেশন/দূতাবাস অ্যাটেস্ট লাগতে পারে—টার্গেট দেশের নিয়ম দেখে নিন।
- খরচ দেশ/কোর্স/শহরভেদে অনেক বদলায়—উপরেরটা কেবল রাফ গাইড; বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল টিউশন টেবিল দেখুন।
আপনি কোন দেশ/বিশ্ববিদ্যালয়ে লক্ষ্য করছেন বললে, আমি সেই দেশের ভিসা-রুলস + নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট-চেকলিস্ট + আপডেটেড ব্যয়-অন্যান্য বিষয় সুন্দর করে জানিয়ে দিব। বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর সত্যিই আনন্দের হোক। তবে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের যে দেশেই যান না কেন সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে তবেই যাবেন।