নামাযের ফরয সমূহ বিস্তারিত 5 ওয়াক্ত নামাজে

Spread the love

নামাযের ফরয ১৪টি। এগুলোর একটিও ছুটে গেলে নামায বিশুদ্ধ হবে না। এর মধ্যে ৭টি নামাযের পূর্বে ফরয এবং এগুলোকে নামাযের শর্ত বলা হয়। ৭টি নামাযের ভিতরে ফর এবং এগুলো নামাযের রুকন বলা হয় ।

নামাযের শর্তাবলী (আহকাম) (নামাযের ফরয সমূহ)

১. সমুদয় অপবিত্রতা থেকে শরীর পবিত্র হওয়া। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

وَإِن كُنتُمْ جُنَّبًا فَاطَهَرُوا

আর তোমরা অপবিত্র হলে পাক সাফ হয়ে যাও। (সূরা মায়িদা, ৫ : ৬)
কারো উযূর দরকার হলে উযূ বা তায়াম্মুম করতে হবে, গোসলের প্রয়োজন হলে গোসল বা তায়াম্মুম করতে হবে।

২. পরিধেয় পোশাক পবিত্র হওয়া। আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন :

وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ

আর তোমার পোশাক পবিত্র কর। (সূরা মুদ্দাসসির ৭৪ : ৪ )
নামাযের সময় পরনে যা-ই থাকবে তা পৰিত্ৰ হওয়া আবশ্যক। নচেৎ নামায হবে না । যেমন : জামা, পায়জামা, টুপি, পাগড়ি, কোট, শেরওয়ানী, মোজা, লুঙ্গি, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ ইত্যাদি।

৩. নামাযের জায়গা পবিত্র হওয়া। অর্থাৎ নামাযীর দু’পায়ের, দু’হাঁটুর, দু’হাতের ও সিদার স্থান পাক হওয়া আবশ্যক ।

৪. সতর ঢাকা । আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন :

يُبَنِي أَدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ.

হে বনী আদম ! প্রত্যেক নামাযের সময় তোমরা সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান করবে। (সূরা আ’রাফ, ৭:৩১ )
পুরুষের জন্য নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের জন্য দু’হাতের কব্জি, পদদ্বয় এবং মুখমণ্ডল ব্যতীত সমস্ত দেহ সতর, এ অঙ্গসমূহ ঢেকে রাখা ফরয।

Google News বিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন

৫. নামাযের ওয়াক্ত হওয়া। কুরআনে ঘোষিত হয়েছে :

انَّ الصَّلوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كتبًا مَّوْقُوتًا

নির্ধারিত সময়ে নামায কায়েম করা মু’মিনের জন্য অবশ্য কর্তব্য। (সূরা নিসা, ৪ : ১০৩) সুতরাং সময়মত নামায আদায় করতে হবে। যে সময়ে নামায আদায় করা ফরয, সে সময়েই ঐ নামায পড়তে হবে।

৬. কিমুখী হওয়া। এ সম্বন্ধে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

قَوْلُوا وُجُوهَكُمْ شَطَرَهُ

তোমরা (নামাযের সময়) কা’বার দিকে মুখ কর। (সূরা বাকারা, ২:১৫০ )
এর অন্যথা করে অন্যদিকে মুখ করে কোন কারণ ব্যতীত নামায আদায় করলে নামায হবে না।

৭. নিয়্যাত করা। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে : (নামাযের ফরয সমূহ)

انَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَاتِ

আমলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। (বুখারী)
তাই, যে নামায আদায় করা হয়, তার জন্য মনে মনে নিয়্যাত করবে। ইমামের পিছনে নামায আদায় করলেও নিয়্যাত করতে হবে।

নামাযের আরকান বিস্তারিত

নামাযের ভিতরে ৭টি কাজ ফরয:

১. তাহরীমা অর্থাৎ নামায আরম্ভ করার সময় আল্লাহ্ তা’আলার মহত্ত্ব প্রকাশ পায় এমন কোন শব্দদ্বারা নামায শুরু করা ফরয। তবে “আল্লাহু আকবার” বলে নামায আরম্ভ করা ওয়াজিব। একে ‘তাক্বীর তাহ্রীমা’ এ জন্য বলা হয়, এ তাক্বীরের মাধ্যমে নামাযের বাইরের সব ধরনের কাজ-কর্ম নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

وَرَبَّكَ فَكَبر

তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। (সূরা মুদ্দাস্সির, ৭৪ : ৩)

২. কিয়াম করা অর্থাৎ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

وَقُومُوا لله قنتين

তোমরা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে বিনীতভাবে দাঁড়াবে। (সূরা বাকারা, ২ : ২৩৮)।
ফরয ও ওয়াজিব নামায দাঁড়িয়ে আদায় করা ফরয। কোন ওযর থাকলে যেভাবে নামায আদায় করা সম্ভব সেভাবে নামায আদায় করার অনুমতি রয়েছে। (নামাযের ফরয সমূহ)

আরও পড়ুন>> কৃষি সেবা পোর্টাল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে 45 সেবা

৩. কিরা’আত পড়া । ইরশাদ হয়েছে :

فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآن

তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ হয়, ততটুকু পড়। (সূরা মুযযাম্মিল, ৭৩ : ২০) চার রাকা’আত বিশিষ্ট ফরয নামাযের প্রথম দু’রাকা’আতে এবং ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাযের সব রাকা’আতে কিরা’আত পড়া ফরয ।

৪. রুকূ’ করা। আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন :

واركَعُوا مَعَ الركعين

তোমরা রুকূ’কারীদের সাথে রুকূ’ কর। (সূরা বাকারা, ২:৪৩ )
প্রত্যেক রাকা’আতে একবার রুকু’ করা ফরয। রুকূ করার নিয়ম হচ্ছে, দাঁড়ানো থেকে একটুকু ঝুঁকতে হবে, যেন দু’হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে যায়। রুকূ’র সময় পিঠ বিস্তৃত রাখতে হয় । নবী কারীম (সা) এভাবেই রুকূ’ করতেন। বসে নামায আদায়ের সময় এতটুকু ঝুঁকতে হবে, যেন কপাল হাঁটু বরাবর গিয়ে পৌঁছে।
৫. সিজদা করা। প্রতি রাকা’আতে দু’টি সিজদা করা ফরয। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

يأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا

হে ঈমানদারগণ ! তোমরা রুকূ’ কর এবং সিজদা কর। (সূরা হাজ্জ, ২২ : ৭৭)

৬. শেষ বৈঠকে বসা। নামাযের শেষ রাকা’আতের সিজদার পর ‘তাশাহ্হুদ’ পড়তে যতটুকু সময় লাগে, ততটুকু সময় বসা ফরয।

৭. সালামের মাধ্যমে নামায সমাপ্ত করা ফরয। শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দুরূদ, দু’আ মাসূরা পড়ার পর সালামের মাধ্যমে নামায শেষ করতে হয়। (নামাযের ফরয সমূহ)

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *