দান করার সওয়াব বেশি না কি ঋণ দেয়ার সওয়াব বেশি?

Spread the love

মানুষ সামাজিক জীবন। তাই জীবন চলার পথে মাঝে-মধ্যেই তাদেরকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের মুখাপেক্ষী হতে হয়। কখনো মানুষ দারিদ্র্যতার নির্মম কষাঘাতে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অন্যের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়। আবার কখনো হঠাৎ অপ্রত্যাশিত কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে বা জরুরি কারণে কারো কাছে আর্থিকভাবে ঋণ নেয়ার প্রয়োজন হয়।সুতরাং এ কথায় কোন সন্দেহ নাই যে, দান বা আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা, ঋণ প্রদান ইত্যাদি মানব কল্যাণমূলক কাজ। এর মাধ্যমে সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সমস্যা দূর করা হয়, বিপদে পতিত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করা হয়, কষ্টে নিপতিত মানুষের কষ্ট নিবারণ করা হয়। তাই ইসলামে দান-সদকা বা ঋণ প্রদান উভয়টিকে বিরাট সওয়াব অর্জনের কারণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন হল, কোনটার সওয়াব বেশি? নিচের হাদিসের আলোকে উত্তর জানবো।

আবু উমামা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করে দেখল, জান্নাতের দরজায় লেখা আছে: “দানের নেকি দশগুণ আর ঋণের নেকি ১৮ গুণ।” (সিলসিলা সাহীহা, হা/১৪৮১ এবং সহিহ তারগিব, হা/৯০০)

উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, দান ও ঋণ উভয়ের প্রতিদান জান্নাত। আর দান করার চেয়ে ঋণ প্রদানের সওয়াব অনেক বেশি।

তবে অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

‘‘কোন মুসলিম যদি অপর কোন মুসলিমকে দু বার ঋণ দেয়, তাহলে তা তাকে এক বার সদকা করার অনুরূপ (সওয়াব পাবে)।” [ইবনে মাজাহ, সনদ হাসান। উৎস: ইরওয়াউল গালীল)

“নিশ্চয় ঋণ দেয়া অর্ধেক দানের স্থলাভিষিক্ত।” (মুসনাদে আহমদ, হা/৩৯১১, সহিহুল জামে লিশ শাইখ আলবানি, হা/১৬৪০)

এখানে দু ধরণের হাদিস দেখা যাচ্ছে। ১মটি বলা হয়েছে, দানে ১০গুণ আর ঋণে ১৮গুণ সওয়াব অর্থাৎ দানের চেয়ে ঋণে ৮গুণ সওয়াব বেশি কিন্তু পরের দুটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে, ঋণের সওয়াব দানের সওয়াবের অর্ধেক। অর্থাৎ এখানে ঋণ দেয়ার চেয়ে দান করার সওয়াব বেশি বলা হচ্ছে। কেননা, আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একবার দান করে যে সওয়াব পাবেন তা পেতে হলে আপনাকে ঐ পরিমাণ অর্থ দু বার ঋণ দিতে হবে।
তাহলে বাহ্যত সওয়াবের পরিমাণের দিক থেকে দু প্রকার হাদিসকে সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে।

এ সাংর্ষিকতা সমাধানে ইমাম মুনাবী বলেন:

“সওয়াব প্রাপ্তির বিষয়টি নির্ভর করছে অভাবী ব্যক্তির অবস্থার উপরে। সুতরাং ঋণ প্রার্থী ব্যক্তি যদি সদকা প্রার্থী ব্যক্তির চেয়ে অধিক অভাবী হয় তাহলে তাকে ঋণ দেওয়া অধিক উত্তম। আর ঋণ দিয়ে সওয়াব পাওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ঋণ দেওয়া। [সুতরাং কেউ যদি কেউ যদি ঋণগ্রহীতাকে তার প্রতি অবদান দেখানো বা কেবল বন্ধুত্বের খাতিরে তাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে ঋণ দেয় তাহলে সওয়াব পাবে না।]

৭ জন ব্যাক্তি যাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *