চুমু দেওয়া ও কদমবুছী করা কি জায়েজ

Spread the love

চুমু দেওয়া ও কদমবুছী করা কি জায়েজ ইসলাম কি বলে? মুরব্বী ও গুরুজনের কদমবুছী এবং হাত কপালে চুমু দেয়া প্রসঙ্গ বলা হয়েছেঃ

কদমবুছীঃ

কারও পা ছুয়ে সেই হাতে চুমু দেয়া মাকরূহ। আর যদি পা ছুয়ে সেই হাতে চুমু দেয়া না হয় বরং শুধু চেহারার উপর মর্দন করা হয় তাহলে কোন মুত্তাকী পরহেযগার ও বরকতময় ব্যক্তির পা ছুয়ে এরূপ করার অনুমতি রয়েছে, যদি এরূপ করনেওয়ালা ব্যক্তি সুন্নাতের পাবন্দ এবং সহীহ আকীদা সম্পন্ন হয়ে থাকে। অন্যথায় এরূপ করা জায়েয হবে না !!

কদমবুছী মাঝে মধ্যে ঘটনাক্রমে জায়েজ স্থানে করা যেতে পারে, তবে এটাকে নিয়ম বানানো ঠিক নয়।

শ্বশুর-শাশুড়ী বা গুরুজনের পায়ে হাত দিয়ে সালাম না করলে বে-আদবী হয়, এটা মনগড়া ধারণা। সালাম করলে শুধু মুখে করবে। সম্মানের ভিত্তিতে সরাসরি মুখ দিয়ে বুযুর্গ ও আলেম ব্যক্তির পায়ে চুমু দেয়ার অবকাশও রয়েছে, তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাথা ঝুকানো জায়েয নয় এবং এটা নিয়ম বানানোর মত বিষয়ও নয় । তাছাড়া তাকালুর (অহংকার) প্রকাশ পায় বিধায় ফোকাহায়ে কেরাম আলেম ও বুযুর্গদেরকে এরূপ চুমু (কদম-বুছী) অর্জন করার জন্য পা বাড়িয়ে দিতে নিষেধ করেছেন ।

হাতে চুমু দেয়াঃ

চুমু দেওয়া – কোন আলেমের হাতে তাঁর ইলমের খাতিরে কিম্বা কোন ন্যায়পরায়ণ বাদশার হাতে তার ন্যায়পরায়ণতার খাতিরে যদি চুমু দেয়া হয়, তবে তাতে কোন দোষ নেই। এ ছাড়া অন্য কারও হাতে বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে সাক্ষাতের সময় যে চুমু খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে, তবে শরীয়তে তার অনুমতি নেই। তবে কারও পক্ষেই এরূপ খাহেশ রাখা পছন্দনীয় নয় যে, অন্য কেউ তার হাতে চুমু দিয়ে তাকে সম্মান প্রদর্শন করুক। কদম বুছীর ন্যায় হাতে চুমু দেয়াকেও নিয়ম বানানাে ঠিক নয়। মাঝে মধ্যে ঘটনাক্রমে করা যেতে পারে ।

 

আরও পড়ুন >> বাকী এবং কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় ইসলামে জায়েজ কিনা?

Google Newsবিস্তারিত জানতে Google News অনুসরণ করুন

 

চেহারা, কপাল ও মাথায় চুমু দেয়াঃ
কোন আলেম, বুযুর্গ ও পরহেযগার ব্যক্তিকে সম্মান ও আজমত স্বরূপ তার চেহারা, কপাল ও মাথায় চুমু দেয়া জায়েয আর খাহেশাত বা প্রবৃত্তির তাড়নায় এরূপ করা হলে তা জায়েয নয়। সাক্ষাৎ বা বিদায়ের সময় কারও গালে বা মুখে চুমু দেয়াও মাকরূহ ।

বিঃ দ্রঃ পিতা-মাতা সন্তানকে স্নেহবশতঃ যে চুমু খায় বা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একে অপরকে যে চুমু খায় তা সর্বাবস্থায় জায়েজ।

দাঁড়িয়ে সন্মান করাঃ

কারও আগমনে দাঁড়িয়ে যাওয়া (কেয়াম করা) কারও আগমনে দাঁড়িয়ে যাওয়া তিন ধরনের ।

(১) সম্মানার্থে দাঁড়ানো ও কোন বুযুর্গ বা সম্মানিত ব্যক্তির প্রতি আন্তরিক সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তাঁর আগমনে দাঁড়িয়ে যাওয়া জায়েয। তবে তাঁর বসে পড়ার পর সকলে বসে পড়বে। তিনি বসে পড়বেন আর সকলে পঁড়িয়ে থাকবে- হাদীছে এটাকে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব সেরূপ করা নিষিদ্ধ ও হারাম।

(২) স্নেহার্থে দাঁড়ানাের কোন স্নেহ ভাজন ও অন্তরঙ্গ কেউ আগমন করলে তার ভালবাসায় বা স্নেহে দাড়িয়ে যাওয়াও জায়েয।

৩) আত্মরক্ষার্থে দাড়ানো ও আগমনকারী ব্যক্তি প্রথম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত নয়, কিন্তু তার আগমনে না দাঁড়ালে সে রুষ্ঠ হবে বা মনঃক্ষুন্ন হবে কিম্বা আগমনকারী তার উপরস্থ, ফলে এভাবে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন না করলে উক্ত অধীনস্তের ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে অথবা তার সম্মানার্থে দাঁড়ালে সে প্রীত হয়ে হেদায়াত গ্রহণ করতে পারে- এরূপ আশা থাকলে এসব ক্ষেত্রেও দাঁড়ানো জায়েয তবে এরূপ ক্ষেত্রেও তার বসে পড়ার পর অন্যরাও বসে পড়বে।

বিঃ দ্রঃ হযরত রাসূল (সঃ) তাওয়াজু, বিনয় ও লৌকিকতা মুক্ত থাকার জন্য তাঁর উদ্দেশ্যে সাহাবীদের দাড়িয়ে যাওয়াকে তিনি অপছন্দ করতেন। অতএব নফস-প্রীতির এই যুগে অনুসরণীয় ব্যক্তি বর্গের পক্ষে হযরত রাসূল (সঃ) এর এই আদর্শ অনুসরণে তার উদ্দেশ্যে অন্যদের দাড়িয়ে যাওয়াকে অপছন্দ করাই নিরাপদ ও পছন্দনীয় পন্থা।

ভিডিও >> পুত্র সন্তানের জন্য আমরা কি কি গুনহা করে থাকি

Check Also

পবিত্র রমজানে

পবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের 10 আমল

Spread the loveপবিত্র রমজানে আল্লাহর নৈকট্য ও পুণ্য লাভের সর্বোত্তম সময়। কেননা রমজান মাসে আল্লাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *