গুনাহ মাফ হওয়ার ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ আমল

Spread the love

গুনাহ মাফ হওয়ার ২৩টি আমল। মানুষ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়, তাই গুনাহ মাফের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইসলাম আমাদের জন্য এমন কিছু সহজ কিন্তু মহৎ আমল শিক্ষা দিয়েছে, যা গুনাহ মাফের দ্বার উন্মুক্ত করে। আল্লাহর রহমত লাভ, অন্তরের প্রশান্তি ও আখিরাতের মুক্তির আশায় ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ আমল অনুশীলন করলে জীবন হবে আলোকিত ও পরকাল হবে নিরাপদ।

গুনাহ মাফ হওয়ার ২৩টি আমল

১। যে ব্যক্তি পিপাসার্তকে পানি পান করাইবে সে গুনাহ হইতে এমন পবিত্র হইবে যে সদ্যজাত শিশু মায়ের পেট হইতে ভূমিষ্ট হইয়াছে। যদি ঐদিন তাহার মৃত্যু হয় তাহা হইলে সে শহীদের মর্যাদা লাভ করিবে। যদি কেহ কাহারও পিপাসা নিবারনে শরবত পান করায় আল্লাহতায়ালা তাহার হাজারও বাসনা পূর্ণ করেন এবং সে দোজখের অগ্নি হইতে মুক্তি পাইবে এবং বেহেশত লাভ করিবে। (আনিসুল আরওয়াহা পৃষ্ঠা -২৭)

২। যে ব্যক্তি লাল দস্তর খানায় গরীব দুঃখীকে আহার করাইবে আল্লাহতায়ালা তাহার পুঞ্জিভূত গুনাহকে খাওয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাফ করিয়া দিবেন। (আনিসুল আরওয়াহ পৃঃ ২২)

৩। যে ব্যক্তি কোন নেক মজলিশে সালাম করিয়া প্রবেশ করে এবং সালামের সাথে বাহির হয় আল্লাহতায়ালা তাহার হাজার বাসনা পূর্ণ করেন এবং তাহার গুনাহ মাফ করিয়া দেন। (আসুিল আরওয়াহ পৃঃ ২২)

৪। যে ব্যক্তি তিনবার সরা এখলাস (কলহু ওয়ালাহু আহাদ) ও তিনবার সরা। ফাতেহা (আল-হামদুলিল্লাহ) পড়িবে তাহার পুঞ্জিভূত গুনাহ্ এমনভাবে দূর হয় যেন সদ্যজাত ভূমিষ্ট শিশু। (আনিসুল আরওয়াহ পৃঃ ৫২)

৫। যখন কোন বান্দা হচি দিয়া আলহামদুলিল্লাহী রাব্বিল আলামিন বলে তখন আল্লাহতায়ালা তার সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়া দেন। আল্লাহতায়ালা পশ্চিমে তওবা নামক একটি দরজা তৈরি করিয়াছেন তাহার বিস্তৃতি সত্তর বছরের পথ এবং তাহার উচ্চতা ৪০ বছরের পথ। মানব সৃষ্টির পর হইতে আজ পর্যন্ত সেই দরজা খােলা আছে। যতদিন পর্যন্ত সূর্য পশ্চিম দিকে উদয় না হবে, ততদিন পর্যন্ত খােলাই থাকিবে। -আল হাদীস

৬। নামাজ, সদকা দান ও কোরআন শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহ্র রহমত, বরকত ও মাগফেরাত লাভ করা যায়। – আল হাদীস

৭। যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর সােবহানাল্লাহ ৩৩ বার আল হামদুলিল্লাহ ৩৩ বার ও আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পড়ে আল্লাহতায়ালা তাহার গুনাহ মাফ করিয়া দেন যদিও তাহা সমুদ্রের ফেনারাশি সমান হয়। – আল হাদীস

Google News বিস্তারিত জানতে Google News এর সঙ্গে থাকুন

৮। যে ব্যক্তি দিনে ১০০ বার সােবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পড়ে, তাহার গুনাহ্ মাফ হইয়া যায় যদিও তাহা সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমাণ হয়। – আল হাদীস

৯। যে ব্যক্তি সত্য মনে করিয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহু কালেমা পাঠ করে এবং পাঠকারী ভূ-পৃষ্ঠ পরিমাণও গুনাহ্ নিয়া আল্লাহর দরবারে হাজির হয় তবুও মহান আল্লাহ তাহার সব গুনাহ মাফ করিয়া দেন। – আল হাদীস

১০। একটি নেক মাহফিলে কোন ব্যক্তি যােগদান করিলে তাহা দ্বারা সেই ব্যক্তির বিশ লক্ষ মন্দ কাজের কাফফারা হইয়া যায়। – সূত্র এহইয়া উলুমুদ্দিন ইমাম গাজ্জালী -আল হাদীস

গুনাহ মাফ এর আমল সমুহ

১১। যে ব্যক্তি ১০০ বার “সুবহানাল্লাহ” পাঠ করিবে তাহার জন্য তাহার আমল নামায় এক হাজার সৎকর্ম লিখা হইবে এবং তাহার এক হাজার পাপ মাফ করা হইবে। – আল হাদীস

১২। যাহারা কোন মজলিসে আল্লাহর যিকির করে তাহাদের গুনাহ্ মাফ করিয়া দেওয়া হয় এবং পাপসমূহ পূণ্যে রূপান্তরিত হয়। -আল হাদীস

১৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, তােমার গােনাহ যদি আসমান পরিমাণও হয় অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও ও তওবা কর আমি তােমাকে ক্ষমা করিব। তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ লইয়া আমার সাথে সাক্ষাৎ কর এবং আমার সঙ্গে কাহাকেও শরীক না কর আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা লইয়া তােমার নিকট উপস্থিত হইব সুবহানাল্লাহ। – আল হাদীস

১৪। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, “সে ব্যক্তি বার। বার অপরাধ করে নাই সে ক্ষমা চাহিয়াছে যদিও সে দৈনিক সত্তরবার উহা করিয়া থাকে। – আল হাদীস

১৫। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন প্রত্যেক আদম সন্তানই অপরাধী আর উত্তম অপরাধী তাহারাই যাহারা তওবা করে। -আল হাদীস

১৬। রাসললাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক হইতে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে তওবা করিবে, আল্লাহ্ তাহার তওবা কবুল করিবেন। -আল হাদীস

১৭। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, আল্লাহতায়ালা রাত্রে আপন হাত প্রসারিত করেন যাহাতে দিনের গােনাহগারগণ তওবা করেন আবার দিনের বেলায় আপন হাত প্রসারিত করেন যাহাতে রাত্রের গােনাগারগণ তওবা করেন। এইভাবে তিনি করিতে থাকিবেন যতদিন না পশ্চিম দিকে সূর্য উদিত না হয়। -আল হাদীস

১৮। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, যখন বান্দা গুনাহ স্বীকার করে এবং মাফ চাহে আল্লাহ উহা কবুল করেন। – আল হাদীস

১৯। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, যদি তােমরা গুনাহ না করিতে আল্লাহ তােমাদিগকে সরাইয়া দিতেন এবং এমন এক জাতিকে সৃষ্টি করিতেন যাহারা গুনাহ্ করিত এবং তওবা করিলে আল্লাহ তাহাদিগকেও মাফ করিয়া দিতেন। -আল হাদীস

২০। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, আল্লাহর কছম আমি দৈনিক সত্তর বার ও এর অধিক আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই ও তওবা করি। তিনি এইরূপ করিতেন উম্মতের শিক্ষার জন্য। – আল হাদীস

২১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, আমার অন্তরে মরিচা পড়ে আর তা সাফ করার জন্য আমি দৈনিক একশত বার আসতাগফিরুল্লাহ পাঠ করি, ইহা উম্মতের শিক্ষার জন্য। -আল হাদীস

২২। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, হে মানবমন্ডলী আল্লাহর নিকট তওবা কর আমি ও দৈনিক একশত বার তাহার নিকট তওবা করি এইরূপ করিতেন উম্মতের শিক্ষার জন্য। -আল হাদীস

২৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, “পাপ হইতে তওবাকারী একেবারে নিস্পাপ ব্যক্তির ন্যায় বটে।
-আল হাদীস

আরও পড়ুন >> সূরা ইখলাস ও সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমুহ

Loading spinner

Check Also

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত: মুসলিমের অপরিহার্য নির্দেশনা

Spread the loveনামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত: নামাজ আল্লাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কিন্তু এই ইবাদত তখনই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *