ইমাম হওয়ার যোগ্যতা:
১। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- জামাআত হিদায়াতের পরিচায়ক সুন্নত, মুনাফিক ছাড়া কেউ তা থেকে পিছিয়ে থাকে না। ইমামতির জন্য সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তি হলেন যিনি সালাতের মাসাইল সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞানী।
২। ইমাম আবূ ইউসূফ (র.) থেকে বর্ণিত, যিনি কিরাত সর্বোত্তম। কেননা সালাতে কিরাত অপরিহার্য। আর ইলমের প্রয়োজন হয় কোন ঘটনা দেখা দিলে। এর উত্তরে আমরা বলি, একটি রুকন আদায়ে আমরা কিরাতের মুখাপেক্ষী আর সকল রুকন আদায়ে আমরা ইলমের মুখাপেক্ষী। ইলমের (ক্ষেত্রে উপস্থিত) সকলে সমান হলে যিনি কিরাতে সর্বোত্তম।
৩। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন- আল্লাহর কিতাব পাঠে সর্বোত্তম ব্যক্তি কাওমের ইমাম হবে। যদি এতে সকলে বরাবর হয় তাহলে সুন্নত সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞানী ব্যক্তি (ইমাম হবে)।
৪। নবী (সা.) আবূ মুলায়কার পুত্রদ্বয়কে বলেছিলেন- তোমাদের দুজনের মধ্যে যে বয়োজ্যেষ্ঠ সে-ই ইমামতি করে। তাছাড়া বয়োজ্যেষ্ঠকে আগে বাড়ালে জামাআতের সমাগম বর্ধিত হবে।
এছাড়াও কিছু মাসলা:
(ক)ক্বিরায়াত বিশুদ্ধ হওয়া।
(খ) ইমাম হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মাসয়ালা-মাসায়িল জানা এবং ক্বলবী ইলম তথা ইলমে তাছাওউফ অর্জনের উদ্দেশ্যে কোশেশে নিয়োজিত থাকা।
(গ) সম্মানিত সুন্নত উনার পাবন্দ হওয়া।
(ঘ) ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ তরক না করা।
(ঙ) বেপর্দা না হওয়া।
(চ) হালাল-হারাম তমিজকারী হওয়া।
(ছ) আক্বীদা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত উনাদের অনুযায়ী হওয়া ইত্যাদি।
ইমাম হওয়ার অযোগ্যতা ও মাকরুহ:
১। দাসকে ইমামতির জন্য আগে বাড়ানো মাকরূহ। কেননা শিক্ষালাভের জন্য সে অবসর পায় না।
২। বেদুঈন কে ইমাম বানালে, কেননা মূর্খতাই তাদের মাঝে প্রবল এবং সে দীনী বিষয়ে যত্নবান নয়।
৩। অন্ধকে ইমাম বানালে, সে পূর্ণরূপে নাপাকি থেকে বেচে থাকতে পারে না।
৪। জারজ সন্তানকে ইমাম বানালে, কেননা তার পিতা ও অভিভাবক নেই, যে তার শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা করবে। সুতরাং অজ্ঞতাই তার উপর প্রভাবিত হয়।
তাছাড়া এদের আগে বাড়ানোর কারণে জনগণের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি হয়। সুতরাং তা মাকরূহ। তবে যদি তারা আগে বেড়ে যায় তাহলে সালাত দুরুস্ত হবে।
ইমামে বয়স:
১। বালেগ হতে হবে অর্থাৎ ১২-১৫বছর বয়স হয় এবং বালেগ হওয়া আলামত যদি পাওয়া যায় তবে ইমামতি করতে পারবে।
২। ইমামতি করার জন বয়স নয় বরং বালেগ হওয়া দরকার। তাহলে একটি ছেলে বালেগ হয় সম্ভবত ১২ বছর বয়সে।
৩। বালেগ হওয়ার পর যদি তার ইমামতির যোগ্যতা থাকে সে ইমামতি করতে পারবে।
আরো পড়ুন : সূরা ইখলাস ও সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমুহ