রেডিও টেলিভিশন ক্রয়-বিক্রয় মাকরূহ (যা হারামের কাছাকাছি) এমন বেশ কিছু ব্যবসা ও বিষয় আছে যা আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো ছাড়াও দুনিয়াতে অনেক ব্যবসা আছে যা যায়েজ। নিম্নে কিছু কাজ ও ব্যবসা মাকরূহ ( যা হারামের কাছাকাছি) সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
যায়েজ নয় এমন কাজঃ
১। রক্ত বিক্রয় করা জায়েয নয়। তবে দুই অবস্থায় রক্ত দেয়া জায়েয ।
ক. যদি রক্ত দেয়া ব্যতীত রোগীর জীবনের আশংকা দেখা দেয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ব্যতীত তার জীবন বাঁচানোর আর কোন পথ না থাকে।
খ. অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ব্যতীত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। তাহলে এরূপ রোগীকে রক্তদান করা জায়েয এবং রোগীর জন্যও এরূপ অবস্থায় রক্ত নেয়া জায়েয।
আরও পড়ুন >> বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বাংলা রচনা
গ. প্রথম অবস্থায় তাকে বিনামূল্যে রক্ত দেয়ার মত কেউ না থাকলে তার জন্য রক্ত ক্রয় করাও জায়েয। তবে রক্ত বিক্রয় করা কারও জন্যেই জায়েয নয়।
২। মানুষের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (যেমন চোখের কর্ণিয়া, কিডনি ইত্যাদি) বিক্রয় করা জায়েয নয় ।
৩। চক্ষু দান করা (জীবদ্দশায় হোক বা মরণোত্তর) জায়েয নয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত যুক্তি প্রমাণ জওয়াহেরুল ফেকাহ ২য় খণ্ডে বর্ণিত হয়েছে। অন্যের চক্ষু ব্যবহার করা জায়েয নয় ।
যায়েজ নয় এমন ব্যবসাঃ
১। বোনাস ভাউচার বিক্রয় করা জায়েয নয়।
২। পেনশন বিক্রয় করা জায়েয নয়, তবে সরকারের কাছে বিক্রি করা জায়েয।
৩। গোবর বিক্রি করা জায়েয ।
৪। পায়খানা বিক্রি করা জায়েয নয়, তবে মাটি হয়ে গেলে এবং মাটি প্রবল হয়ে গেলে বিক্রি করা জায়েয ।
৫। কিস্তিতে (অধিক মূল্যে হলেও) ক্রয় বিক্রয় করা জায়েয, তবে পূর্ণ কিস্তি পরিশোধ না করলে বিক্রিত দ্রব্য ফেরত গ্রহণ ও বিগত প্রদত্ত কিস্তির টাকা বাজেয়াপ্ত করার শর্ত আরোপ করা হলে সেরূপ বিক্রয় নিষিদ্ধ।
৬। ক্রেতা ক্রয় করতে অস্বীকার করলে জমি ইত্যাদির বায়নার টাকা ফেরত দেয়া জরুরী । তবে বায়না করার পর বিক্রেতার সম্মতি ছাড়া ক্রেতার ক্রয় করতে অস্বীকার করার অধিকার নেই।
৭। রেডিও, টেপরেকর্ডার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে মাসআলা হল- যদি গান বাজনা ইত্যাদি গোনাহের কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে হয় তাহলে ক্রয় করা জায়েয নয় এবং এরূপ ক্রেতার নিকট বিক্রয় করাও জায়েয নয়, অন্যথায় জায়েয়।
৮। টেলিভিশন ক্রয়-বিক্রয় মাকরূহ তাহরীমী (যা হারামের কাছাকাছি।
৯। মদ, গাজা, হেরোইন প্রভৃতি ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়। আফিম যেহেতু ঔষধে ব্যবহৃত হয় তাই বিক্রয় করা জায়েয, তবে যে এটা দ্বারা নেশা করবে বলে প্রবল ধারণা হয় তার নিকট বিক্রয় করা মাকরূহ তাহরীমী ও না জায়েয়।
১০। বিড়ি সিগারেট বিক্রয় করা জায়েয, তবে বিড়ি সিগারেট সেবন যেহেতু মাকরূহ তাই এগুলো বিক্রি করা মাকরূহ কাজে সহযোগিতা করার নামান্তর। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
আরও পড়ুন >> এসির রিমোট ব্যবহারের সহজ নিয়ম – AC Remote
১১। ছেড়া ফাটা টাকা (নোট)-এর বদলায় ভাল টাকা (নোট) কম বেশী করে বদলানো দুরস্ত নয়।
১২। বাদ্যযন্ত্র ক্রয়-বিক্রয় না জায়েয।
১৩। বিধর্মীদের বইপত্র, বাতিলপন্থীদের বইপত্র বিক্রয় করা জায়েয নয়।
১৪। খেলাধুলার সাজ-সরঞ্জাম বিক্রয় করা জাযেয় নয়।
১৫। সরকার স্মাগলিং বা চোরাই বে আমদানীকৃত মালামাল আটক পূর্বক সেগুলো নিলামে বিক্রয় করলে সেগুলো ক্রয় করা জায়েয নয়। কারণ সরকার সেগুলোর মালিক নয়।
১৬। ডিপো হোল্ডারের পক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য গ্রহণ করা জায়েয নয়।
১৭। বর্তমানে প্রচলিত কৌটা ও প্যাকেটে বিভিন্ন মালের যে ওজন লেখা থাকে সেই ওজন ধরে নিয়ে ঐ মাল উক্ত ওজনের মূল্যে বিক্রয় করা জায়েয । গ্রাহককে মেপে দেয়া জরুরী নয় ।
১৮। লটারির টিকিট ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়।