নাটোরের বাগাতিপাড়ায় রোগাক্রান্ত অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস বিক্রির সময় তা জব্দ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে কিন্তু নেয়া হয়নি কোনো আইনিপদক্ষেপ।
আজ (৭ এপ্রিল) সকালে বাগাতিপাড়ার দয়রামপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটেছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা এ বি এম আলমগীর জানান, উপজেলার দয়ারামপুর বাজার এলাকার আবু বকরের ছেলে মিজান কসাই রাতে একটি অসুস্থ গরু জবাই করে তা সকালে বিক্রি করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার দোকানে নোংরা পরিবেশে ও বাসার নোংরা ফ্রিজে রাখা সমস্ত মাংস জব্দ করা হয়। এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী, জব্দকৃত মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হয় সেই সাথে তাকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, জবাই করা গরুটি রোগাক্রান্ত ও অসুস্থ ছিলো এবং গরুটি জবাই করার বিষয়ে কোন সনদপত্র ইস্যু করা হয়নি।
এ সময় প্রাণীসম্পদ অফিসের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল মোত্তালেব (ভি এফ এ) উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেয়ে সেই কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে মাংসগুলো জব্দ করে তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে বলি এবং মিজান (কসাই)কে কড়া হুশিয়ারি দিতে নির্দেশ দেয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তার এবং তার সকল সহযোগীদের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন >> ভয়াবহ ৬০টি কবীরা গুনাহ ।। প্রচলিত কিছু কবীরা গুনাহ
এ সম্পর্কে গরুর মালিক রাজ্জাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তার গরুর কেনা ছিলো ৫০ হাজার টাকা। অসুস্থার কারনে সে গ্রাম্য পশু ডাক্তারকে দেখালে ডাক্তার বলেন, এটা কোন ডাক্তারের পক্ষে সুস্থ করা সম্ভব না। এজন্য তিনি মিজান কসাইকে ডেকে ১২হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করেন।
মিজান কসাই এব্যাপারে মুঠোফোনে বলেন, গরুটি অসুস্থ ছিলো সেটা জেনে গ্রাম্য পশু ডাক্তার একাব্বরের অনুরোধে গরুটি ক্রয় করেন এবং বিক্রির জন্য মাংস ফ্রিজ জাত করেন। তিনি সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন আমি অন্যায় করেছি। এমন কাজ আর করবোনা।
এবিষয়ে গ্রাম্য পশু ডাক্তার একাব্বর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, গরুটি অসুস্থ ছিলো। তিনিই রাজ্জাককে গরু বিক্রি করতে বলেন এবং কসাই মিজানকে গরুটি কিনতে অনুরোধ করেন। অসুস্থ গরু কিনে জবাই করতে মিজানকে অনুরোধ করলেন কেনো,এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার ভুল হয়েছে এটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একজন মাংস ক্রেতা বলেন, মাংস কেনার জন্য তিনি মিজানের মাংসের দোকানে যান। সেসময় তিনি জানতে পারেন এই মাংস একটি অসুস্থ গরুর। এবং বিষয়টি উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। তিনি আফসোস করে আরও বলেন, মাংস জব্দ হলো সেগুলো পুঁতে ফেলাও হলো কিন্তু কোনো আইনিপদক্ষেপ গ্রহণ করা হলোনা। এতে করে সে বিস্মিত।
এব্যাপারে কনজুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব’র বাগাতিপাড়া উপজেলা সভাপতি আব্দুল মজিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মিজান কসাই রোগাক্রান্ত অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করে যে কাজ করেছে সেটি জঘন্য এবং ক্ষমার অযোগ্য। তার মতে মিজান মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করেছে। এমন জঘন্য কাজ করার পরেও আইনিপদক্ষেপ না নিয়ে শুধু মৌখিক হুশিয়ার করা হলো কেনো সেটি তার বোধগম্য নয়। ওই কসাইকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা উচিৎ ছিল বলে তিনি মনে করেন।
zohabd.com/আল-আফতাব খান সুইট, বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি
আরও পড়ুন >> ট্রাস্ট ব্যাংক বাড়ী নির্মানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে সহজেই