ইন্টারনেট অপব্যবহার থেকে সাবধান। ইন্টারনেট আজ মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর অপব্যবহার ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। ভুয়া তথ্য, সাইবার অপরাধ, আসক্তি ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়া ব্যক্তি ও সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা, সঠিক দিকনির্দেশনা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি।
ইন্টারনেট অপব্যবহার থেকে সাবধান
প্রযুক্তি ও স্মার্টফোনের দাপ
প্রযুক্তি ও স্মার্টফোনের দাপটের এই যুগে মানুষ এখন বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেটে ব্যয় করে থাকে। প্রয়োজনে -অপ্রয়োজনে উভয় ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। এর ফলে মানুষ হয়তো অনেক কিছু সহজে পেয়ে পাচ্ছে। ফলে তাদের জীবনযাত্রা হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে সহজ হয়ে উঠেছে। আবার ইন্টারনেটে অতিমাত্রায় আসক্তি থেকে ঘটছে নানা সমস্যা।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে গবেষকদের মত, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে ইন্টারনেটের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দরকার নেই। তাদের পরামর্শ, একটা নির্দিষ্ট সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করা ক্ষতির কিছু না। তবে সেটা যেনো কোনোভাবেই সপ্তাহে মোট ২৫ ঘণ্টার বেশি না হয় এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তারা।
বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্য প্রোফাইলে না রাখা
প্রযুক্তি ও স্মার্টফোন সামাজিক মাধ্যমগুলো বাধ্যতামূলক প্রয়োজনীয় সাধারণ তথ্যের বাইরেও প্রচুর ব্যক্তিগত তথ্য চাইতে পারে, কিন্তু সেসব তথ্য প্রদানে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যেমন, বাসস্থানের ক্ষেত্রে পুরো ঠিকানা না দিয়ে শুধুমাত্র জেলা বা বিভাগের নাম উল্লেখ করা। তাই ইন্টারনেট অপব্যবহার থেকে সাবধান নিজেকের সাবধান থাকতে হবে।
প্রাইভেসি সেটিংসে দক্ষতা অর্জন
কমবেশি সব সামাজিক মাধ্যমেই ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান নিয়ন্ত্রণ ও সে তথ্যের কতটুকু কোন পক্ষ দেখতে পাবে, প্রযুক্তি ও স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারকারীর হাতে থাকে। কে বা কারা কোন কোন তথ্য, পোস্ট, ছবি বা লোকেশন দেখতে পারবে, তা প্রাইভেসি সেটিংসে গিয়ে নিশ্চিত করে নেওয়া যায়। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় ব্যবহারকারীর সচেতনতাই সবচেয়ে জরুরি প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।
পাসওয়ার্ড হতে হবে শক্তিশালী
একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। পাসওয়ার্ড বানানোর সময় বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, বিভিন্ন প্রতীক বা চিহ্ন, সংখ্যার ব্যবহার করলে তা শক্তিশালী হিসেবে ধরা যায়। জন্মতারিখ, প্রিয়জনের নাম অথবা সহজেই অনুমেয় কোনো শব্দ বা সংখ্যা না ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। একই পাসওয়ার্ড একাধিক সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহার না করা ও কোনোভাবেই ডিভাইসে তা সংরক্ষণ না করার বিষয়টির ওপরও জোর দেন তারা।
বন্ধু তালিকায় কারা আছেন? কজনই বা পরিচিত?
কিছু দিন আগেও ব্যবহারকারীদের মাঝে অলিখিত প্রতিযোগিতা চলত, কার বন্ধুতালিকায় বন্ধু বা অনুসারীর সংখ্যা কত বেশি। ইন্টারনেট লিটারেসি ও এ সম্পর্কে সচেতনতা আগের চেয়ে কিছুটা বাড়ায় ব্যবহারকারীরা এখন বোঝেন, যত বেশি মানুষের সঙ্গে সংযুক্তি থাকবে সামাজিক মাধ্যমে ততই কমতে থাকবে শেয়ারকৃত তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ। তাই বন্ধুতালিকায় কে থাকছে, তা ব্যক্তিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সিকিউরিটি সফটওয়্যার ও ব্রাউজার আপডেট করতে হবে নিয়মিত
প্রযুক্তি ও স্মার্টফোন বিভিন্ন ভাইরাস, ম্যালওয়্যার ও হ্যাকারদের হাত থেকে ডিভাইস ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকার জন্য সব অ্যাপ ও ডিভাইসের সবচেয়ে সুরক্ষিত সংস্করণ ব্যবহারের চেষ্টা করা উচিত। এতে নিরাপত্তা বলয় আরও সুরক্ষিত থাকে। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করছেন রাইয়ান ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ব্রাউজার আপ-টু-ডেট না থাকলে ডিভাইসের বাইরের ডাটা যখন নেটওয়ার্কের বাইরে যায়, তখন হ্যাকারদের হাতে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।’
ক্লিকবেইটের ফাঁদে পা নয়
প্রযুক্তি ও স্মার্টফোন মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যমগুলোয় বিভিন্ন ধরনের ক্লিকবেইট বা থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন থাকে, যেগুলোর অধিকাংশই ভ্যারিফায়েড বা সুরক্ষিত নয়। এসব ক্লিকবেইট অনেক সময় তথ্য চুরি করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে।
লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ রাখা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় পোস্টের সঙ্গে অনেকে কোনো স্থানে অবস্থানকালেই সেখানকার লোকেশন শেয়ার করে পোস্ট করেন। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট স্টকারদের জন্য লোকেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
শরীয়ত ও তরিকতের মৌলিক পার্থক্য এবং সম্পর্ক
নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত